সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: আবার বিতর্কে বীরভূমের কেষ্ট। ‘উন্নয়ন’ নিয়ে কবিতা লেখায় এবার কবি শঙ্খ ঘোষের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। বুধবার পুরুলিয়ার জঙ্গলমহলে নির্বাচনী প্রচারে এসে তিনটি জনসভাতেই ওই কবিকে নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। কবির নাম শঙ্খ রাখা ঠিক হয়নি বলে মনে করছেন তিনি। তবে এরপরেও যে তিনি ‘উন্নয়ন’ বিষয়ে অনঢ় তা এদিন বুঝিয়ে দেন।
প্রচার মঞ্চ থেকে জানান, ‘উন্নয়ন’ রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে। বাড়ি থেকে বেরোলেই উন্নয়ন দেখা যায়। অনুব্রত মণ্ডলের কথায়, “বড় বড় কথা বলছে এক কবি। এ কোন কবি? আমরা তো কবি বলতে জানতাম রবীন্দ্রনাথ, নজরুল। এ কোন নতুন কবি উঠে এসেছে? যে আমার ‘উন্নয়ন’ নিয়ে কথা বলছে। যখন দিলীপ ঘোষ বলছে মেরে চামড়া গুটিয়ে নুন-লঙ্কা দিয়ে দেব তখন কবি কোথায়? কবির নাম শঙ্খ রাখা ঠিক হয়নি। শঙ্খ নামের অপমান করছেন তিনি। আমি এখনও বলছি রাস্তায় উন্নয়ন দাঁড়িয়ে আছে। ঘর থেকে বার হলেই উন্নয়ন দেখতে পাওয়া যায়।”
এই নির্বাচনের মনোনয়ন পর্বে বীরভূমে যখন ত্রি-স্তরেই একের পর এক আসনে বিরোধীরা মনোনয়ন করতে পারছিলেন না তখনই এই জেলার তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মন্ডল রাস্তায় ‘উন্নয়ন’ দাঁড়িয়ে থাকার বিষয়টি বলেন। তারপর থেকেই এই কথা কে ঘিরে বিতর্ক চলছে। সম্প্রতি কবি শঙ্খ ঘোষ এই নিয়ে কবিতা লেখেন। এরপরেই এদিন পুরুলিয়ার তিনটি জনসভাতেই ওই কবিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন অনুব্রত মণ্ডল। অতীতে বহুবার নানান কথা বলে বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি। এদিন সরাসরি কবি শঙ্খ ঘোষকে তাঁর লেখা কবিতা নিয়ে এভাবে আক্রমণ করায় আবার নতুন করে বিতর্কে জড়ালেন তিনি।
এদিন অনুব্রত মণ্ডলের প্রথম সভা ছিল বরাবাজারের বানজোড়ায়। দ্বিতীয় সভা করেন বরাবাজারের সিন্দরিতে। তাঁর শেষ সভা ছিল বলরামপুরে। তিনটি জনসভাতেই ভিড় উপচে পড়ে। বরাবাজারের বানজোড়ার সভায় বলেন, “বীরভূমে জেলা পরিষদে ৪২টি আসন। একটিতেও মনোনয়ন দিতে পারেনি বিরোধীরা। এই জেলায় কেন হল না?” তবে তিনি যে মনোনয়নে কোনও বাধা দেননি তা এদিন পরিষ্কার করে দেন তিনটি জনসভাতেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঢালাও উন্নয়নের জন্যই তৃণমূলের বিরুদ্ধে বীরভূমে ত্রি-স্তরের অধিকাংশ আসনে প্রার্থী দেয়নি বলে জানান তিনি। রাজ্যের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কথা সামনে এনে প্রশ্ন
তোলেন, বিজেপি শাসিত পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ডে কেন কন্যাশ্রী নেই, কেন সবুজশ্রী নেই, কেন সবুজসাথী নেই? তাই বিজেপিকে ভোট দিয়ে সর্বনাশ করবেন না বলে জানান তিনি। মুকুল রায়ের নাম না করে বলেন, “এখন একজন খুব লাফাচ্ছে। কিন্তু কোনও কাজই হবে না।” এদিন বলরামপুরে সভা করতে ঢোকার আগে অনুব্রত মণ্ডলকে নির্বাচনী বিধি ভেঙে বাইক মিছিলের মাধ্যমে স্বাগত জানানো হয়। তবে ওই বাইক মিছিলকে ধন্যবাদ জানিয়ে অনুব্রত বলেন, “যারা বাইক মিছিল করেছে তাদের ধন্যবাদ জানাই। তারা ‘উন্নয়ন’-এর প্রচার করেছে।” বরাবাজারের দুটি সভায় ছিলেন বান্দোয়ানের বিধায়ক রাজীবলোচন সোরেন।
ছবি: অমিত সিং দেও
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.