ধীমান রায়, কাটোয়া: কাটোয়া, আউশগ্রামের পর এবার কেতুগ্রাম। পূর্ব বর্ধমান জেলার ফের ভোটের হিংসার বলি একজন। এক প্রৌঢ়কে থেঁতলে খুনের অভিযোগ। নিহতের নাম পুলক সরকার (৫৬)। বাড়ি কেতুগ্রামের উত্তরদাসপাড়া।
শনিবার ভোট চলাকালীন পুলক সরকারকে বেধড়ক মারধর করা হয়। কলকাতায় নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার মৃত্যু হয় তাঁর। এই মৃত্যুর ঘটনার পর শুরু হয়েছে রাজনৈতিক টানাপোড়েন। নিহত ব্যক্তি তাঁদের দলের কর্মী বলে দাবি করেছে সিপিএম। তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, পুলক সরকার তাঁদেরই সমর্থক ছিলেন। জানা গিয়েছে, শনিবার পুলক সরকারকে মারধরের পর তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে কাঁদরা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় কলকাতায় নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এদিন বিকেলের দিকে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। রবিবার নিহতের স্ত্রী মারধরের ঘটনায় কেতুগ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
কাটোয়া মহকুমা পুলিশ আধিকারিক কৌশিক বসাক জানিয়েছেন, শনিবার ভোটের দিন ঝামেলা হয়। ওই ঝামেলায় গুরুতর জখম হন পুলক সরকার। ওই ঘটনায় ইতিমধ্যেই তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে কেতুগ্রাম থানার পুলিশ। নিহতের স্ত্রী পূর্নিমা সরকার জানিয়েছেন, শনিবার বিকেল তিনটে নাগাদ তিনি যখন ভোট দেওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হন তখন পাড়ার লোকজনদের মুখে শুনতে পান তার স্বামীকে ভোটকেন্দ্রের কাছেই মারধর করা হয়েছে। পূর্নিমা দেবী অভিযোগপত্রে জানান, প্রতিবেশী এক মহিলার কাছে তিনি জানতে পারেন, তাঁর স্বামীকে উত্তরপাড়ার মোড়ে সুব্রত দে ও ফোঁচা দাস মিলে মারধর করছে৷ ইঁট দিয়ে থেঁতলে মারা হয়েছে। তারপর পাড়াপ্রতিবেশীরা পুলকবাবুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। জানা যায়, পুলকবাবু রেলের ঠিকাদারের কাছে কাজ করতেন। ভোটের জন্য কয়েকদিন আগে বাড়িতে এসেছিলেন।
সিপিএমের কেতুগ্রাম জোনাল কমিটির সদস্য মিজানুল কবীর ধীরাজ বলেন, “পুলক সরকার আমাদের দলের সমর্থক ছিলেন। তৃণমুলের দুস্কৃতীরাই তাঁকে মেরেছে৷ ভোট লুটের চেষ্টায় বাধা দেওয়ায় তার ওপর হামলা হয়।” কেতুগ্রামের বিধায়ক শেখ শাহনেওয়াজ বলেন, “পুলক সরকার দীর্ঘদিন ধরেই আমাদের দলের কর্মী ছিলেন। সিপিএম অযথা রাজনীতি করছে। তবে যারাই মারুক তাদের আইন অনুযায়ী শাস্তি হবে।” তবে আত্মীয়দের একাংশের দাবি পুলকবাবু কোনও রাজনৈতিক দল করতেন না। প্রায় ১০ বছর আগে কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। শনিবার দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সময় পুলক সরকার মাঝে পড়ে গিয়ে জখম হন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.