সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: ১০০ দিনের কাজের জন্য গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যকে কাটমানির টাকা দেননি বাবা-মা। তার ফলে এক কলেজ ছাত্রীকে কন্যাশ্রী প্রকল্পে নাম লেখানোর জন্য অবিবাহিতের সার্টিফিকেট না দেওয়ার অভিযোগ উঠল গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বিষ্ণুপুর থানার রসখালি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। প্রশাসনিক কর্তাদের হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত সোমবার ওই ছাত্রীকে সার্টিফিকেট দিল গ্রাম পঞ্চায়েত।
কে কে দাস কলেজের বাংলা অনার্সের ছাত্রী পল্লবী নস্কর। সোমবার তিনি কন্যাশ্রী প্রকল্পের জন্য নাম নথিভুক্ত করতে প্রয়োজনীয় সার্টিফিকেট হাতে পেলেন পঞ্চায়েত প্রধান তপতী বাছারের কাছ থেকে। প্রশাসনিক কর্তাদের চাপে এদিন রসখালি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান দমদমার বাসিন্দা পল্লবীর হাতে ওই সার্টিফিকেট তুলে দেন। সাটিফিকেট হাতে পেয়ে খুশি পল্লবী। তিনি জানান, “সত্যেরই জয় হল। জয় হল মুখ্যমন্ত্রীর সাধের কন্যাশ্রী প্রকল্পেরও।” তাঁর অসুবিধার কথাটি প্রকাশ্যে আনার জন্য সংবাদমাধ্যমকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন ওই কলেজ ছাত্রী। ধন্যবাদ জানিয়েছেন জেলাশাসক পি উলগানাথন সহ জেলা ও ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকদেরও। বিষয়টিকে ইস্যু করে আন্দোলন শুরু করেছিল যে বিজেপি, সেই বিজেপির ডায়মন্ডহারবার সাংগঠনিক জেলার নেতা সুফল ঘাঁটুও ছাত্রীটিকে সার্টিফিকেট পেতে সাহায্য করায় প্রশাসনকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ওই ছাত্রী রসখালি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য দীপঙ্কর নস্করের কাছে কন্যাশ্রী প্রকল্পে নাম লেখানোর জন্য অবিবাহিতের সার্টিফিকেট পাওয়ার জন্য ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ চাইতে যান। কিন্তু পঞ্চায়েতের সদস্যরা তাঁর বাবা-মায়ের ১০০ দিনের কাজের জন্য পাওয়া টাকার কাটমানি দাবি করেন বলে অভিযোগ ওঠে। তা না দেওয়াতেই ওই ছাত্রীকে সার্টিফিকেট দেওয়া হয়নি বলে ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক ও জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জানানো হয়। অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামেন প্রশাসনিক কর্তারা। যদিও ওই পঞ্চায়েত সদস্য পালটা অভিযোগ করেন, কাটমানি নয়, ওই ছাত্রীর বাবা অসিত নস্করকে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে অগ্রিম বাবদ তিনি ১৯ হাজার ১০০ টাকা দিয়েছিলেন। অসিতবাবু দীর্ঘদিন সেই টাকা তাঁকে শোধ না করায় ওই টাকাই দিতে বলেছিলেন তিনি। কোন কাটমানিই ওই ছাত্রীর কাছে চাওয়া হয়নি। এদিন তিনি বলেন, “বিষয়টিকে মিথ্যে প্রচার করে বিজেপি কন্যাশ্রী প্রকল্পের বদনাম করতে চেয়েছিল। শেষপর্যন্ত তা না পারায় পিছু হটতে হয়েছে বিজেপি নেতাদের।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.