দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট (Panchayat Election) পরবর্তী পরিস্থিতিতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠা বিভিন্ন জায়গায় পরিদর্শনে যাচ্ছেন বিরোধী দলনেতা। শনিবার হাওড়ার আমতা, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরে (Baruipur)তিনি যান আক্রান্ত দলীয় কর্মীদের দেখতে। অভিযোগ, দুই জেলাতেই জয়ী বিজেপি প্রার্থীদের উপর হামলা চলছে। তাঁরা বাধ্য হয়ে বাড়ি ছেড়ে রয়েছেন আশ্রয় শিবিরে। সেখানে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি জানতে চান শুভেন্দু অধিকারী। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এসব সম্পর্কে বলার পাশাপাশি ভাঙড় নিয়েও তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, ”নওশাদ সাহেবকে বলুন ভাঙড়ের দরজা খুলতে, আমি নিশ্চয়ই যাব। তবে তার আগে ওঁকে বলতে হবে – নো ভোট টু মমতা।”
ঘরছাড়া বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে শনিবার বারুইপুর পূর্ব জেলা কার্যালয়ে যান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। নির্বাচনের দিন ঘোষণার পর থেকে ভোট পরবর্তী হিংসার শিকার পুরুষ ও মহিলা মিলে প্রায় ১১৭ জন ঘরছাড়া এখন আশ্রয় নিয়েছেন বারুইপুর পূর্ব জেলা বিজেপির পার্টি অফিসে। যাদের মধ্যে রয়েছে কয়েকজন বাচ্চাও। এদিন তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন বিরোধী দলনেতা। ঘরছাড়া পরিবারগুলোর হাতে নতুন কাপড় তুলে দেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের নিজের সঙ্গে নিয়ে ঘরে ফেরানোর আশ্বাস দেন।
এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ভোট পরিস্থিতি নিয়ে শাসকদলের বিরুদ্ধে ভোট লুট-সহ একাধিক কড়া অভিযোগের তুলেছেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর মতে, সবচেয়ে খারাপ অবস্থা উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার। আহত বিজেপি কর্মীদের সরকারি হাসপাতালে জায়গা হয়নি বলে অভিযোগ করেন শুভেন্দু। তাঁদের জন্য রবিবার একটি বিশেষ মেডিক্যাল টিম পাঠিয়ে চিকিৎসা করানো হবে বলে আশ্বাস তাঁর।
ভোট হিংসা প্রসঙ্গে সাংবাদিকরা তাঁকে ভাঙড় নিয়ে প্রশ্ন করেন। কেন তিনি অশান্ত ভাঙড়ে যাচ্ছেন না? এই প্রশ্নের জবাবে সামান্য ভেবে শুভেন্দু বলেন, ”ভাঙড়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি হলে যাব নিশ্চয়ই। তার আগে তো নওশাদ (Nawsad Siddique) সাহেবদের দরজা খুলতে হবে। তাঁরা তো নিজেদের সম্প্রদায়কে ভুল বোঝাচ্ছেন যে বিজেপি সাম্প্রদায়িক দল। ওসব ছেড়ে ওঁদের বলতে হবে – নো ভোট টু মমতা। আমরা সেটাই করতে এসেছি। হিন্দু-মুসলমান করতে আসিনি।” তাঁর এই মন্তব্যে হতবাক অনেকেই। তবে কি মমতা-বিরোধী যে কোনও দলকেই কাছে টানতে রাজি বিজেপি? শুভেন্দু কি সেই বার্তাই দিলেন? রাজনৈতিক মহলের একাংশে জল্পনা রয়েছে, আইএসএফের উত্থান আসলে বিজেপিকে সুবিধা করে দিচ্ছে। শুভেন্দুর বক্তব্যে কি তাতেই সিলমোহর পড়ল?
এ বিষয়ে নওশাদ পরে বলেন, ‘‘আমি প্রথম থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করে আসছি। এই পঞ্চায়েত ও আগের বিধানসভা নির্বাচনেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভোট দিতে বারণ করেছি। তৃণমূল কম ভোট পেলে বাংলার পক্ষে ভাল। আমি কি দরজা খুলব? উনি (শুভেন্দু) রাজ্যের বিরোধী দলনেতা, সিনিয়র লিডার। শুধু ভাঙড়, বারুইপুর, আমতা কেন, সারা রাজ্যেই ওঁকে যেতে হবে। সিপিএম-কংগ্রেস-আইএসএফ সকল মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.