ছবি: শান্তনু দাস।
নন্দন দত্ত, সিউড়ি: তিনি যেন না থেকেও রয়েছে সর্বদা, জেলার সর্বত্র। পঞ্চায়েত ভোটের আগে বীরভূমের (Birbhum) ঘাসফুল শিবিরকে দেখলে বোঝার উপায়ই নেই শিবিরের সেনাপতি সশরীরে হাজির নেই। রয়েছেন কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরের কারাবাসে। বলা হচ্ছে অনুব্রত মণ্ডলের কথা। ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনেও জেলা তৃণমূল ভরসা সেই অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mandal)। ইতিমধ্যেই বীরভূমে বেশ কিছু আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল। বাকি আসনে বৈতরণী পার করতে তাই জেলা সভাপতির ছবি দেওয়া হোর্ডিংয়ে ছেয়ে গেল সিউড়ির জেলা তৃণমূল (TMC) ভবন। শনিবারই জেলা প্রচারের শুরুর দিন কোমা গ্রামে সাংসদ তথা বীরভূমের তৃণমূল কোর কমিটির সদস্য শতাব্দী রায় কৃতজ্ঞতা জানিয়েছিলেন অনুব্রত মণ্ডলের প্রতি। তার পরদিনই সিউড়িতে অনুব্রত মণ্ডলের ছবি দেওয়া হোর্ডিং ফের ভোট বাজারে জেলায় প্রাসঙ্গিক করে তুলল তিহাড় জেলবন্দি জেলা সভাপতিকে।
অনুব্রতর বন্দিদশায় জেলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee), অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় কোথাও অনুব্রতর ছবি দেওয়া হোর্ডিং দেখা যায়নি। এর আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্বাগত জানাতে বোলপুরে মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা ও বিকাশ রায়চৌধুরীর ফ্লেক্স ছবি দিয়ে তোড়ন তৈরি হলেও অনুব্রতর ছবির টিকি দেখা যায় নি। যা নিয়ে দলে আলোচনা হয়েছিল বিস্তর। এমনকি মুখ্যমন্ত্রীর বোলপুরের জনসভায় অনুব্রতর কাটআউট নিয়ে নানুরের কয়েকজন সমর্থক এলে তা নিয়ে তাঁদের সতর্কও করা হয়।
এখন অনুব্রত নেই, কিন্তু তাঁর ভোটকৌশলে জেলার পাঁচটি পঞ্চায়েত সমিতি প্রায় ৫২ টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও একটি জেলা পরিষদের আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল। কিন্তু শুধু কি সিউড়ি এলাকায় তাঁর ছবি না থাকার ব্রত ভাঙল? এনিয়ে এলাকার বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘মানুষের মনে আছেন অনুব্রত, আমাদের প্রিয় কেষ্টদা। আমি যেখানে থাকব, সেখানেই অনুব্রতর ছবি থাকবে।’ উল্লেখ্য, বিকাশবাবু দলের কর্মীদের নির্দেশ দেন, তাঁর সিউড়ি বিধানসভা এলাকার প্রতিটি প্রান্তে এমনকি তিনি এবার ইলামবাজারের জেলা পরিষদের প্রার্থী, সেখানেও সর্বত্র অনুব্রত মণ্ডলের ছবি যেন থাকে। সেইমতো ছবি লাগানোর কাজ চলছে। বিকাশবাবুর কথায়, ‘‘সারা জেলা এই পদ্ধতি মেনে চলবে।’’
সিউড়ির (Suri) জেলা তৃণমূল ভবনে, হোর্ডিংযে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দিয়ে লেখা হয়েছে – ‘উন্নয়নের অঙ্গীকারে, নবজোয়ারের স্রোতে…।’ একদিকে বিকাশ রায়চৌধুরী, অন্যদিকে অনুব্রত মণ্ডলের ছবি। অনুব্রতর ছবিতে ভরসা রেখে ভোট পার করা। এই ছবি দেওয়ার নেপথ্যে দলকে জোটবদ্ধ করে রাখা? নাকি তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন, তা নিয়ে জেলার রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে আলোচনা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.