বিক্রম রায়, কোচবিহার: রাজ্যপালের সফরের মাঝেই উত্তপ্ত হয়েছে কোচবিহারের (Cooch Behar) গীতালদহ। আক্রান্ত হয়েছেন তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি। গুরুতর আঘাত নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আক্রান্ত তৃণমূল (TMC) নেতাকে দেখতে রবিবার সকালেই বেসরকারি হাসপাতালে হাজির হলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। গীতলদহে খুন হওয়া আরেক তৃণমূল কর্মীর পরিবারের সঙ্গে রাতেই ফোনে কথা বলেন তিনি। তবে রাজ্যপালের এই ভূমিকা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে।
পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayat Election 2023) নির্বিঘ্নে মেটাতে সক্রিয় রাজ্য়পাল (Governor)। কখনও রাজ্য় নির্বাচন কমিশনকে সতর্ক করেছেন তো কখনও পুলিশ-প্রশাসনকে সঠিক ভূমিকা পালনের বার্তা দিয়েছেন। তবে শুধুমাত্র আদেশ-নির্দেশের মধ্যে আটকে নেই তিনি। রাজভবনে খুলেছেন পিস রুম। ফোন করে সেখানে অভিযোগ জানানো যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, গ্রাউন্ড জিরোর রাজ্যপাল হয়ে অশান্তি কবলিত ভাঙড়, ক্যানিং, কোচবিহার ঘুরে বেরাচ্ছেন তিনি। নিহত, আহত রাজনৈতিক কর্মীদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলছেন তিনি। বিরোধীদের অভিযোগ শুনছেন। তবে রাজ্যপালের এই ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। তাঁদের অভিযোগ ছিল, বেছে বেছে নিহত বিজেপি নেতা-কর্মী. আহত বিরোধীদের সঙ্গে দেখা করছেন সিভি আনন্দ বোস। অথচ এবার পঞ্চায়েতে তৃণমূল নেতাকর্মীদের রক্ত ঝরেছে সবচেয়ে বেশি। শনিবার রাতেই তৃণমূলের সেই অভিযোগ নস্য়া করতে তৎপর হন।
দিন কয়েক আগে গীতালদহে বাবু হক নামে এক তৃণমূল কর্মী খুন হন। রাতেই তাঁর পরিবারকে ফোন করেন রাজ্যপাল। পরিবার সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে উপযুক্ত সাহায্যের আশ্বাস দেন বোস। জানান, রাজভবন থেকে তাঁদের আবার ফোন করা হবে। এরমাঝেই ফের উত্তপ্ত হয় গীতালদহ। ওই অঞ্চলের ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মাহফুজার রহমানকে বেঁধে রেখে নৃশংসভাবে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে বিজেপিআশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। গুরুতর অবস্থায় তাঁকে রাতে কোচবিহার শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করানো হয়। খবর পেয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার ও জেলা পুলিশ সুপারকে ফোন করেন রাজ্য়পাল। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা ও শান্তিতে ভোট করানোর বার্তা দেন তিনি। এরপর রবিবার সকালে সশরীরে হাসপাতালে হাজির হয়েছেন রাজ্যপাল। আক্রান্ত তৃণমূল নেতার সঙ্গে দেখা করে পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন।
যদিও তৃণমূলের অভিযোগ, আক্রান্ত জোড়াফুল শিবিরের কর্মীদের সঙ্গে দেখা করলেও দোষীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারির দাবি জানাননি রাজ্যপাল। বিজেপি বা অন্য বিরোধীরা আক্রান্ত হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থার কথা বলছেন। এক্ষেত্রে কেন তা হল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শাসকদল। পালটা বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, রাজ্যপালের সাংবিধানিক দায়িত্ব রাজ্যপাল জানেন। তাই তিনি কী করবেন না করবেন, তা তৃণমূলকে শিখিয়ে দিতে হবে না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.