সৈকত মাইতি, তমলুক: এ যেন একেবারেই ছন্দপতন! প্রায় ৪০ বছর একটানা পদে থাকার পর ৮২ বছর বয়সে গিয়ে পরাজয় স্বীকার করতে হল তৃণমূল প্রার্থী সন্তোষ কুমার ঘড়াকে। তাঁর নিকটবর্তী প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থীর কাছে তিনি মাত্র ৬৬ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন। ১৯৮৩ থেকে ২০২৩। টানা ৪০ বছর পঞ্চায়েতে অপরাজেয় ছিলেন ৮২ বছরের সন্তোষ কুমার ঘড়া।
তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের শান্তিপুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতে রামচন্দ্রপুর বুথের তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন এবারে। এনিয়ে ন’বার ভোটের ময়দানে তিনি নেমেছেন। কখনও পঞ্চায়েত প্রধান তো কখনও আবার উপপ্রধানের দায়িত্ব সামলেছেন সন্তোষবাবু। এদিকে, দীর্ঘদিনের পঞ্চায়েত আসনে জয়ী প্রার্থীর বয়স ৮২’র কোটায় হলেও বাড়ি বাড়ি ভোট প্রচারের কাজে কোনও খামতি রাখেননি তিনি।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৮৩ সালে প্রথমবার কংগ্রেসের টিকিটে ভোটের লড়াইয়ে জয়ী হন। তারপর আরও দু’বার কংগ্রেসের (Congress) টিকিটে জয়ী হন তিনি। এরপর ১৯৯৮ সালে তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই যোগ দিয়ে জয়ী হন সন্তোষবাবু। এভাবেই নিজের রামচন্দ্রপুর বুথ থেকে সাতবার এবং নিকটবর্তী বুড়াড়ি বুথ থেকে একবার জয়ী হয়েছেন। সেই সঙ্গে নয়ের দশকে একবার প্রধান হন। তারপর টানা উপপ্রধান পদে রয়েছেন। বর্তমানে আবার রামচন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের বিদায়ী উপপ্রধানের দায়িত্ব সামলে এসেছেন তিনি।
৮২ বছরের এই প্রার্থী তৃণমূলের (TMC) টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছিলেন রামচন্দ্রপুর বুথে। আর তাঁর বিপরীতে প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে ছিলেন বিজেপি প্রার্থী নবীন দাস। মঙ্গলবার ভোটের ফলাফল শেষে দেখা যায়, মোট ৭৭৫টি ভোটের মধ্যে নির্দল পায় ৫, সিপিএম পায় ৮টি ভোট। বাকি তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে সন্তোষবাবু ৩৩৩ ভোট পান। স্বাভাবিক কারণেই বয়সে অপেক্ষাকৃত নবীনের কাছে ৬১টি ভোটের ব্যবধানে হেরে যান ৮২ বছরের বৃদ্ধ সন্তোষবাবু। অবশ্য সন্তোষবাবুর দাবি, ‘‘চক্রান্ত করে সিপিএমের সমস্ত ভোট বিজেপিতে গিয়েছে। তাই জয়ের বিষয়ে আশাবাদী থাকলেও ভোটের এই সমীকরণে এমন পরাজয় স্বীকার করতে হয়েছে।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.