ধীমান রায়, ভাতার: পাশাপাশি বাড়ি। হেঁসেল আলাদা হয়ে গেলেও দুই পরিবারের মধ্যে সদ্ভাব এখনও অটুট। ভালমন্দ রান্না হলে জা’র ঘরে ঠিক তা পৌঁছে যায়। কিন্তু রাজনৈতিক ময়দানে দুই জা সন্মুখ সময়ে।
পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার আমারুন ২ পঞ্চায়েতের ছাতনি গ্রামে একই আসনে ভোটে লড়ছেন দুই জা। বড় জা বর্ণালী রায় কংগ্রেসের প্রার্থী। আর তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছোট জা মণিমালা রায় তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে লড়ছেন। আমারুন ২ পঞ্চায়েতের ২১৮ নম্বর বুথে দুই জায়ের মধ্যে ভোটের লড়াইয়ে ঘিরে পুরোদমে প্রচারে নেমেছে দুই শিবিরই। ছাতনি গ্রামের বাসিন্দা বর্ণালীদেবী গৃহবধূ। তাঁর স্বামী দেবপ্রসন্ন রায় একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। বছর তিনেক আগে কাজ থেকে অবসর নিয়েছেন। বাড়িতে জমিজমা রয়েছে। এক ছেলে, এক মেয়ে। দুজনেরই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। সচ্ছল পরিবার।
জানা যায়, বর্ণালীদেবী বিগত পঞ্চায়েতে তৃণমূল কংগ্রেসের নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। আর এবারে দলের কাছে টিকিট না পেয়ে তিনি কংগ্রেসের হয়ে লড়ছেন। দেবপ্রসন্নবাবু বলেন,”আমি তৃণমূল কংগ্রেসের জন্মলগ্ন থেকেই দল করি। আমার স্ত্রী সদস্য থাকাকালীন এলাকার জন্য যথেষ্ট ভাল কাজ করা হয়েছে। প্রার্থীতালিকা ঘোষণার মুখেই দলের পক্ষ থেকে আমাদের ফোন করে বলা হয়েছিল এবারেও আমার স্ত্রীকে প্রার্থী করা হয়েছে। পরে মনোনয়নপত্র জমার শেষ মুহূর্তে জানতে পারি দলের টিকিট দিয়ে দেওয়া হয়েছে আমার ভাইয়ের স্ত্রীকে। তবে ভাইয়ের পরিবারের সঙ্গে আমাদের কোনও দ্বন্দ নেই। দলের এই দ্বিচারিতার প্রতিবাদেই আমার স্ত্রীকে কংগ্রেসের হয়ে মনোনয়নপত্র জমা করতে বলি।”
বর্ণালীদেবী বলেন, “আমার স্বামীর সঙ্গে দেওরের সম্পর্ক ভাল। আমার সঙ্গে আমার জা মণিমালার সম্পর্ক ভাল। তবে রাজনৈতিক লড়াইটা আলাদা জিনিস।” দেবপ্রসন্নবাবুদের পাশেই বাড়ি তাঁর ভাই দেবদূত রায়ের। দেবদূতবাবুর স্ত্রী মনিমালাদেবী ওই ২১৮ নম্বর বুথ থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে লড়ছেন। বাড়িতে রয়েছেন এক ছেলে। মনিমালা দেবী বলেন, “যদিও একই পরিবারের মধ্যে ভোটের লড়াই হচ্ছে। তবে আমার সঙ্গে আমার জায়ের সম্পর্ক ভাল। আসলে টিকিট না পেয়ে দলের ওপর অভিমান করে দিদি কংগ্রেসের টিকিটে ভোটে লড়ছেন। তবে জয় আমাদেরই হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.