বিক্রম রায়, কোচবিহার: রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayat Election) মনোনয়ন পর্ব মিটেছে যথেষ্ট অশান্তির মধ্যে দিয়ে। ১৫ জুন মনোনয়ন শেষের পর ২০ তারিখ পর্যন্ত চলবে স্ক্রুটিনি। আর এই পর্বেও শুরু হল অশান্তি। শনিবার কোচবিহারের সাহেবগঞ্জে বিডিও অফিসের সামনে চলল বোমাবাজি। আক্রান্ত হয়েছেন বলে অভিযোগে সরব হলেন বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক (Nisith Pramanik)। অভিযোগ, তৃণমূল কর্মী, সমর্থকরা তাঁকে বাধা দেয়, গাড়ি লক্ষ্য করে তির-ধনুক নিয়ে হামলা চালানো হয়েছে। এনিয়ে পুলিশের সঙ্গেও একপ্রস্ত বাদানুবাদ হয় নিশীথের। পালটা তৃণমূলের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে এসে বিজেপিই (BJP) হামলা চালিয়েছে।
শনিবার সকাল থেকে দিনহাটার (Dinhata) সাহেবগঞ্জ বিডিও অফিসের সামনে চাপা উত্তেজনা ছিল। স্ক্রুটিনি ঘিরে সেখানে তৃণমূল (TMC) সমর্থকরা বাড়তি জমায়েত করছিল বলে অভিযোগ ওঠে বিজেপির তরফে। প্রার্থীরা অভিযোগ জানান, তাঁদের বিডিও অফিসে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। হাতাহাতিও শুরু হয় তাঁদের মধ্যে। এই খবর পেয়ে গোড়া থেকেই সাহেবগঞ্জে বাড়তি পুলিশ, কমব্যাট ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছিল। আর দলের প্রার্থীদের অভিযোগ পেয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকও বিডিও অফিসে যাবেন বলে জানান।
সেইমতো তিনি দুপুর নাগাদ বিডিও অফিসে পৌঁছতেই তাঁর গাড়িতে হামলা চলে অভিযোগ। সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যায় প্রচুর পুলিশ। উত্তেজিত জনতাকে সরানো চেষ্টা করে। কিন্তু পরিস্থিতি নিমেষের মধ্যে এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে পুলিশ বাহিনীকে কার্যত হিমশিম খেতে হয়। জানা যাচ্ছে, দিনহাটা ২ পঞ্চায়েত এলাকায় গ্রাম পঞ্চায়েতের সংখ্যা ১২টি। তার মধ্যে দুটিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে তৃণমূল। বিজেপি গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির অনেক আসনেই প্রার্থী দিতে পারেনি। তৃণমূলের অভিযোগ, সেই কারণেই স্ক্রুটিনি পর্বে পরিকল্পিতভাবে ঝামেলা বাঁধাচ্ছে গেরুয়া শিবির। তবে নিশীথের অভিযোগ, পুলিশ তৃণমূলের হয়ে কাজ করছে। বিজেপি কর্মী, প্রার্থীদের উপর অকারণ অত্যাচার করছে। গোটা সাহেবগঞ্জেই এ নিয়ে উত্তেজনা চরমে।
এই ঘটনায় পালটা নিশীথ প্রামাণিককেই দায়ী করছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। জেলার নেতা পার্থপ্রতিম রায়ের অভিযোগ, ”নিশীথ প্রামাণিক নিজের নিরাপত্তা বাহিনী নিয়ে সাহেবগঞ্জের বিডিও অফিসটি দখল করেছেন। তাঁর নেতৃত্বেই বোমাবাজি হয়েছে। তাঁরা পঞ্চায়েতের সব স্তরে মনোনয়ন দিতে পারেনি। তাই বিষয়টি ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য় এসব নাটক করছেন নিশীথ প্রামাণিক।” দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষেরও অভিযোগ, ”ওখানকার লোকজনই তো বলছে কেন্দ্রীয় বাহিনী বিডিও অফিসের সামনে অতিসক্রিয়তা দেখিয়েছে। নিশীত আবার আমাদের বিরুদ্ধে কী বলবেন? তাঁরই দলের নেতা তো গিয়ে রাজভবনে দেখা করছেন। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে কারা কী করছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.