অভিষেক চৌধুরী, কালনা: সত্তরের দশকে সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা মারধর করে তাঁর পা ভেঙে দিয়েছিল। কিন্তু মন ভাঙতে পারেনি। দুর্নীতিমুক্ত ভারত গড়তে সেই ভাঙা পায়েই সাইকেল নিয়ে ‘ভারত জোড়ো’যাত্রায় কালনা (Kalna) থেকে কার্শিয়াং অর্থাৎ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি পথ পাড়ি দিয়ে সকলের নজর কেড়েছিলেন কালনার সিমলনের ৭২ বছর বয়সী বৃদ্ধ প্রভাত দাস। এবারের পঞ্চায়েত ভোটে (Panchayat Election) কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন তিনি।
কালনার আটঘরিয়া-সিমলন পঞ্চায়েতের প্রত্যন্ত গ্রাম সিমলনের বাসিন্দা প্রভাত দাস। ১৯৭২ সালে কালনা কলেজ থেকে বিএসসি পাশ করলেও কোথাও কোনওদিন চাকরির জন্য আবেদন করেননি। বরং চাষবাস ও সমাজসেবার কাজেই নিজেকে নিয়োজিত করেন। আত্মপ্রত্যয়ী,অবিবাহিত,গান্ধীবাদী এই কংগ্রেস নেতা দ্বিতীয়বারের জন্য পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। গতবার পঞ্চায়েতে দাঁড়িয়েও জিততে না পারায় আক্ষেপ নেই তাঁর। তাই এবারেও এলাকার উন্নয়ন ও দুর্নীতি রুখতে কালনা ১ নং পঞ্চায়েত সমিতির ১৯ নং আসনে প্রার্থী হয়েছেন তিনি।
সকাল হতেই সাদা ধুতি ও পাঞ্জাবী পরিহিত এই নেতা নিজের সাইকেলে চেপে নিজের ও নিজেদের দলের প্রার্থীদের সমর্থনে বিভিন্ন এলাকায় দুয়ারে-দুয়ারে প্রচার চালাচ্ছেন। পাশে সেইভাবে কাউকে দেখা না গেলেও তিনি যেন একাই একশো। চরম রোদকে উপেক্ষা করেও প্রতিদিনই ৩০-৪০কিলোমিটার সাইকেল নিয়ে দৌড়াচ্ছেন বলে তিনি জানান। হাত চিহ্ন এঁকে নিজেই পোস্টার লিখে সাইকেলের সামনে সাঁটিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন। তাঁর প্রচারে গুরুত্ব পেয়েছে চাষিদের বকেয়া ফসল বিমার টাকা সুদ -সহ, ১০০ দিনের কাজের নিশ্চয়তার মত দাবি।
প্রভাতবাবু বলেন,“এলাকার উন্নয়ন ও দুর্নীতি রুখতেই আমি দ্বিতীয়বারের জন্য ভোটে দাঁড়িয়েছি। এর আগে ১৯৭৮ সালে সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা মারধর করে আমার পা ভেঙে দিয়েছিল। সেই থেকে ভাল করে হাঁটতেও পারি না, কানেও কম শুনি। তা সত্বেও আমি ভেঙে পড়িনি। এই নিয়েই সাইকেলে চেপে ‘ভারত জোড়ো’যাত্রাতেও শামিল হয়েছি। এবার এলাকার মানুষের উন্নয়ন করার কথা ভেবে এই বয়সেও ভোট ময়দানে নেমেছি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.