Advertisement
Advertisement

Breaking News

Pahalgam Terror Attack

হড়পা বানের দোসর জঙ্গিহানা, প্রাণ হাতে নিয়ে ফিরছেন অশোকনগরের ১২ পর্যটক

গত ১৮ এপ্রিল পহেলগাঁও ঘুরে দিল্লি ফেরার কথা ছিল এই পর্যটক দলের।

Pahalgam Terror Attack: 12 tourists from Ashoknagar got stucked in Srinagar due to the attack and flash flood
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:April 24, 2025 9:00 pm
  • Updated:April 24, 2025 9:07 pm  

অর্ণব দাস, বারাসত: প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের টানে ভূস্বর্গে ভ্রমণ। কাশ্মীরের পহেলগাঁও হয়ে রাতে জম্মু থেকে দিল্লি আসার কথা ছিল অশোকনগরের ১২ পর্যটকের। সেইমতো রওনাও দিয়েছিলেন। কিন্তু বাধা হল হড়পা বান। ৫০কিলোমিটার গিয়েও মাঝপথে শ্রীনগর ফিরতে হয়েছিল তাঁদের। সেখানে একদিন থেকে রওনা হবেন বলেই ঠিক করেছিলেন। কিন্তু পহেলগাঁওয়ের বৈসারন উপত্যকায় জঙ্গি হামলার পর থেকে বাঙালি এই পর্যটকরা গত চারদিন ধরে শ্রীনগরের হোটেলে ঘরবন্দি হয়ে রয়েছেন। বেড়ানোর বাজেটের টাকাও ইতিমধ্যে শেষ। সবমিলিয়ে আতঙ্ক আর অর্থকষ্টে যথেষ্ট বিপাকের মধ্যেই রয়েছেন তাঁরা। হড়পা বান আর জঙ্গি হামলার জাঁতাকলে পড়ে এমন পরিস্থিতি হল যে কল্পনাই করতে পারছেন না গুপি মজুমদার, পল্লবী দাস, শম্পা মজুমদাররা।

গত ১১ এপ্রিল অশোকনগর থেকে ১২জন মিলে কাশ্মীর রওনা দিয়েছিলেন। দলে ৫ জন পুরুষ, ৭জন মহিলা। প্রত্যেকেই একে অপরের আত্মীয়। ১৩ তারিখে ভূস্বর্গে পৌঁছে শ্রীনগর, গুলমার্গ, সোনমার্গ, টিউলিপ গার্ডেন দেখে ১৮ এপ্রিল তাঁরা পৌঁছন পহেলগাঁওয়ে। জঙ্গি হামলার একদিন আগেই বৈসারন উপত্যকা দেখে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন তাঁরা। এরই মধ্যে রামবান জেলার ধর্মকুণ্ডু গ্রামে হড়পা বানের কারণে ১৫ কিলোমিটার রাস্তা ভেসে যায়। সেনাবাহিনী আর পর্যটকদের এগোতে দেয়নি। মাঝপথ থেকেই শ্রীনগরের হোটেলে গিয়ে ওঠেন ১২জন।

Advertisement
জঙ্গি হামলার ২ দিন আগেই বৈসরন উপত্যকা ঘুরে এসেছেন এই পর্যটকরা। নিজস্ব ছবি।

এর ৩৬ ঘণ্টা পরেই পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিদের বুলেটে গণহত্যার ঘটনা। বাছাই করে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ২৫ জনকে খুন করা হয়। জঙ্গিদের সামনে ঢাল হয়ে দাঁড়াতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেন পহেলগাঁওয়ের টাট্টুঘোড়া চালক আদিল। এরপর থেকে সময় যত গড়িয়েছে গোটা কাশ্মীর জুড়ে সেনাবাহিনীর নিরাপত্তা বেড়েছে। পহেলগাঁও থেকে শ্রীনগর কার্যত বনধের চেহারা নিয়েছে। গোটা শ্রীনগর শহরটাই থমথমে পরিবেশ। রাস্তাঘাট পর্যটক শূন্য। দোকানপাট সব বন্ধ। ফলে শ্রীনগরের হোটেলে তিনটি ঘরে অতিরিক্ত চারদিন বন্দি হয়ে রয়েছেন গুপি মজুমদাররা। স্বাভাবিক ভাবেই বাজেটেও ঘাটতি হয়েছে তাদের। খরচ বাঁচানোর জন্য বাধ্য হয়েই তাঁরা দোকান থেকে আলু, ডিম কিনে কোন রকমে হোটেলের রান্না করে খাচ্ছেন। পর্যটকদের এই দুরবস্থা শুনে হোটেল কর্তৃপক্ষ অবশ্য তাদের রান্না করতে অনুমতি দিয়েছে।

অশোকনগরেই থাকেন গুপি মজুমদারের শ্যালক। তিনিই ১২ জনের জন্য ২ লক্ষ ১৮ হাজার টাকা দিয়ে বিমানের টিকিট কেটে পাঠিয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাতে শ্রীনগর থেকে বিমানে কলকাতায় ফিরছেন আটকে পড়া অশোকনগরের পর্যটকরা। শম্পা মজুমদার জানিয়েছেন, ভূস্বর্গের সৌন্দর্য দেখার স্বপ্ন ছিল অনেক দিনের। সেই স্বপ্নপূরণ হয়েছে ঠিকই। কিন্তু হড়পা বান আর জঙ্গি হামলায় আনন্দটা দুশ্চিন্তায় কাটল। অতিরিক্ত চারদিনের জন্য ৩ লক্ষ টাকা বেশি খরচ করতে হল। পল্লবী দাসের কথায়, ”জঙ্গি হামলার ঘটনাস্থল থেকে অবশ্য আমরা অনেকটাই দূরে, শ্রীনগরে ছিলাম। কিন্তু সন্ত্রাসীরা যেভাবে হিন্দুদের বেছে বেছে হত্যা করেছে, তাতে আতঙ্কটা কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement