অরূপ বসাক, মালবাজার: করোনা ভাইরাস সংক্রমণের পর থেকে রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে যাওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা ভীতি কাজ করছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। তাঁদের আশঙ্কা, হাসপাতাল থেকে যদি করোনা ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে গাঁ-গঞ্জে এই প্রবণতাটা বেশি। এই ভীতি কাটাতে জলপাইগুড়ির মালবাজার মহকুমা এলাকার প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষজনের পাশে দাঁড়ালেন বাইক অ্যাম্বুল্যান্স দাদা তথা পদ্মশ্রী করিমুল হক। এখন তাঁর বাড়ির সামনে অসুস্থদের ভিড় উপচে পড়ছে। লক্ষ্য একটাই, প্রাথমিক চিকিৎসা পাওয়া।
প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে অসুস্থ রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছে দিতে বাইক অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা চালু করেছিলেন করিমুল হক। তাঁর এই কাজ জাতীয় স্তরে ব্যাপক প্রশংসা কুড়োয়। যার জেরে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হন তিনি। তারপর থেকে আর যাত্রা থেমে থাকেনি। যেখানে প্রয়োজন, সেখানেই হাজির বাইক অ্যাম্বুল্যান্ত দাদা করিমুল হক। করোনা আবহেও সেই কাজ আরও বেড়েছে যেন। তবে এবার তাঁকে দেখা যাচ্ছে ডাক্তারের ভূমিকায়। তাঁর বাড়িতে কেউ আসছেন প্রেশার মাপাতে, কেউ বা পেটের সমস্যা নিয়ে, কেউ আবার সামান্য জ্বর-সর্দির সমস্যার চিকিৎসা করাতে। আর করিমুলও প্রতিদিন সকাল থেকে এঁদের সেবা করে আসছেন।
করিমুল হকের কথায়, “আমি ডাক্তার নই। তবে রক্তচাপ মাপার যন্ত্র আছে, তা দিয়েই মানুষের প্রেশার মেপে দিচ্ছি৷ কারও সামান্য জ্বর বা সর্দি হলে, চিকিৎসকদের সঙ্গে ফোনে পরামর্শ নিয়েই চিকিৎসকরা যে ওষুধ দিতে বলছে, সেই ওষুধ দিয়ে দিচ্ছি। প্রয়োজন হলে নিজের বাইকে করে রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করিয়ে আনছি। শুধু চিকিৎসাই নয়, নিজেরা যা খাচ্ছি, সেই খাবার থেকে গরীব মানুষদের একবেলা খেতেও দিচ্ছি। এতে তাঁরাও খুশি, আমরাও খুশি।” তবে সাধারণ মানুষের কাছে তিনি দাবি জানিয়েছেন, লকডাউনের সময় কেউ যেন বাড়ি থেকে বাইরে বের না হন। যেসব জায়গায় বা রেশন দোকানে ভিড় হচ্ছে, সেইসব জায়গায় তিনি ছুটে গিয়ে মানুষকে বোঝাচ্ছেন, যাতে সকলে মিলে অযথা ভিড় না করেন। আর করিমুলের কথা মেনে ভিড় নিমেষে ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.