নিজস্ব সংবাদদাতা, তেহট্ট: বিগত বিধানসভা কিংবা লোকসভা ভোটের মতো বেশি সংখ্যক প্রার্থী নেই উপনির্বাচনে। তাই প্রার্থী তালিকা যথেষ্ট ছোট করিমপুরে। আসন্ন উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করা রাজনৈতিক দলের সদস্যদের সমর্থকদের ভোট এবার কোন দিকে পড়বে, তাই নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
বিগত নির্বাচনগুলির মত এবারে প্রধান তিন প্রতিপক্ষ – তৃণমূল, বিজেপি ও সিপিএম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী ছাড়া অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলির তরফে করিমপুর বিধানসভা উপনির্বাচনে ভোটে দাঁড়ানোর তেমন হিড়িক নেই। সোমবার প্রার্থীদের মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে দেখা গেল, মাত্র চারজন প্রার্থী এবারের উপনির্বাচনে লড়াইয়ে আগ্রহী। সাধারণত বিধানসভা ও লোকসভার ভোটে প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ছাড়াও জাতীয় কিংবা রাজ্যস্তরের বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ভোটে লড়ার জন্য প্রার্থী দিতেন। এমনকী কয়েকজন নির্দল প্রার্থীও ভোটে লড়ার জন্য মনোনয়ন পেশ করতেন।
করিমপুর-সহ রাজ্যের ৩ বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের ভোট ঘোষণা হয়েছে গত ২৫ অক্টোবর। তারপর গত ৪ নভেম্বর সর্বপ্রথম তৃণমূলের পক্ষ থেকে করিমপুর কেন্দ্রে প্রার্থী বিমলেন্দু সিংহরায় মনোনয়নপত্র জমা দেন। ৫ তারিখে প্রথমে সিপিএম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী গোলাম রাব্বি মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর বিজেপি প্রার্থী জয়প্রকাশ মজুমদার মনোনয়নপত্র জমা দেন। তবে ঘটনাক্রমে এদিনই আরেক নথিভুক্ত রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে এক প্রার্থী মনোনয়ন পত্র দাখিল করেন।
তেহট্ট মহকুমা তথ্য সংস্কৃতি আধিকারিক সুবীর সরকার বলেন, “সোমবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময় পেরিয়ে যাওয়া পর দেখা গিয়েছে, তৃণমূল, বিজেপি, সিপিএম ও একটি নথিভূক্ত রাজনৈতিক দল থেকে একজন মোট চারজন এবারের ভোটে লড়ছেন।” এবারে কম সংখ্যক প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেওয়ায় এলাকায় জোর রাজনৈতিক চর্চা শুরু হয়েছে। কারণ, বিগত নির্বাচনগুলিতে দেখা গিয়েছে তিন থেকে চারটি প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দলের প্রার্থী ছাড়াও অন্যান্য ও নির্দল প্রার্থীদের মিলিত ভোটের যোগফল প্রায় ১০হাজার। এবারে সেই ভোট কোন দিকে যাবে, সেই হিসেবনিকেশই চলছে।
২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএম, তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি ছাড়া আরও পাঁচ প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন। সেবার সমরেন্দ্রনাথ ঘোষ ৫০৮৫ ভোটে তৃণমূলের রমেন্দ্রনাথ সরকারকে পরাজিত করেছিলেন। আর প্রধান তিন দল ছাড়া অন্যান্য দলগুলির মিলিত ভোটের সংখ্যা ছিল ৯৮৬০। আবার ২০১৬ সালে তৃণমূল কংগ্রেস, সিপিএম ও বিজেপি ছাড়াও ছয় প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছিল। সেবারে তৃণমূল কংগ্রেসের মহুয়া মৈত্র ১৫৯৯৮ ভোটে সিপিএমের সমরেন্দ্রনাথ ঘোষকে পরাজিত করেছিলেন। এই ক্ষেত্রেও দেখা গিয়েছিল, অন্যান্য প্রার্থীদের মিলিত ভোট ছিল ১১৮১৫।
এদিকে, উপনির্বাচনের মুখে আরও শক্তিশালী হল স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। কংগ্রেসের গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলে যোগদান করলেন। মঙ্গলবার বিকেলে করিমপুর বিধায়ক কার্যালয়ে মহুয়া মৈত্র হাতে থেকে দলীয় পতাকা নিয়ে কংগ্রেস গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য বকুল কুমার হালদার তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন। দলত্যাগ প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘করিমপুরে আমার জন্মস্থান, এলাকাতে আগের বিধায়করা বছরের পর বছর যা করতে পারেননি, গত তিন বছরে আমাদের প্রাক্তন বিধায়k মহুয়া মৈত্র সেই উন্নয়ন করে দেখিয়ে দিয়েছেন। তাঁর এই উন্নয়ন দেখে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করলাম।’ অন্যদিকে, সোমবার বালিয়াডাঙ্গা হাই স্কুলের মাঠে বিজেপির জনসভা মঞ্চ থেকে দিলীপ ঘোষের কাছ থেকে পতাকা নিয়ে সিপিএমের প্রাক্তন জেলা পরিষদ সদস্য মনিগোপাল বিশ্বাস সিপিএম বিজেপিতে যোগদান করেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.