শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: প্রাথমিকে হাজার তিরিশেক পদের জন্য আবেদন জমা পড়ে কয়েক লক্ষ। কয়েক মাস আগে গ্রুপ-ডি পরীক্ষায় শূন্যপদের তুলনায় আবেদনপত্র এত বেশি জমা পড়েছিল যে, তা কার্যত রেকর্ডের পর্যায়ে চলে যায়। রেল থেকে স্কুল, রাজ্য কিংবা কেন্দ্রীয় সরকারের যে কোনও চাকরির শূন্যপদে নিয়োগের ক্ষেত্রে এটাই দস্তুর। কিন্তু এই চাকরির আকালের মধ্যে জলপাইগুড়িতে উলটপুরাণ।
[মাসে কোটি টাকার উপর আয় ৬ বছরের খুদের, কীভাবে জানেন?]
সেখানে শূন্যপদ দশটি। আর আবেদনকারী মাত্র দু’জন! চিকিৎসক চেয়ে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল জলপাইগুড়ি জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর। কিন্তু মাত্র দু’টি আবেদনপত্র জমা পড়ায় কার্যত হতাশ জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা। আপাতত দু’জনের হাতে নিয়োগপত্র ধরিয়ে দিয়ে বাকি পদ পূরণ করতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করার কথা ভাবছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। তাতে আরও চিকিৎসক আবেদন করলে শূন্যপদ পূরণ করা সম্ভব হবে বলে এখনও আশাবাদী স্বাস্থ্যদপ্তর। শুধু চিকিৎসক নয়, নার্স নিয়োগের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। চারজন নার্স চেয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল সংবাদপত্রে। কিন্তু আসেন মাত্র একজন।
[জাল ডাক্তারের মতো ভুয়ো রেজিস্ট্রারের বাড়বাড়ন্ত, বহু বিয়ে বাতিল]
জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, জলপাইগুড়ি জেলার ব্লক এবং গ্রামীণ হাসপাতাল মিলিয়ে এই মুহূর্তে ৩৮ জন ডাক্তারের পদ খালি রয়েছে। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ন্যাশনাল রুরাল হেলথ মিশন প্রকল্পে ১০ জন চিকিৎসক নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেয় জলপাইগুড়ি জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর। একইসঙ্গে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় চারজন নার্সের শূন্যপদ পূরণের জন্য। কিন্তু কোনও ক্ষেত্রেই উল্লেখযোগ্য সাড়া না পাওয়ায় চিকিৎসক ও নার্সের পদ আপাতত পূরণ হচ্ছে না।
জলপাইগুড়ির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জগন্নাথ সরকার জানান, শুধু এ রাজ্যে নয়, রাজ্যের বাইরে থেকেও যাতে চিকিৎসক পাওয়া যায়, তার জন্য ভিন রাজে্যও বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতেও খুব একটা লাভ হয়নি। বিজ্ঞাপনে সাড়া দিয়ে এলেন মাত্র দু’জন চিকিৎসক। স্বাভাবিক ভাবেই হতাশ জলপাইগুড়ি জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের চেয়ারম্যান তথা আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, এ রাজ্যে শুধু নয়, রাজ্যের বাইরেও যে চিকিৎসকের অভাব রয়েছে, এই ঘটনা তারই প্রমাণ। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর এদিনের মতো দু’জনকে দিয়েই নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করেন তাঁরা। মঙ্গলবারই দুজনের হাতে নিয়োগপত্র ধরিয়ে দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জগন্নাথ সরকার জানান, ডাক্তার পেতে সবরকম চেষ্টাই করা হবে। তার জন্য আরও কিছুদিন অপেক্ষা করা হবে। কিন্তু তাতেও যে খুব একটা কাজ হবে বলে মনে হচ্ছে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.