শুভময় মণ্ডল: বিয়ের আসরের পর এবার রক্তদান শিবিরেও পিঁয়াজ উপহার। আর সেই ‘উপহার’ ঘিরে দানা বাঁধল বিতর্কও। নতুন বছরের গোড়াতেই বারাকপুরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের তরফে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। সেই শিবিরে রক্তদাতাদের এক কিলো করে পিঁয়াজ উপহার দেওয়া হয়। কিন্তু রক্তদান শিবিরে উপহার দেওয়া যাবে না, এ নিয়ে স্পষ্ট নির্দেশিকা রয়েছে। তা সত্বেও এই উপহার কেন দেওয়া হল, তা নিয়ে বিতর্ক হয়। যদিও সেই বিতর্ক উড়িয়ে আয়োজকদের দাবি, কেন্দ্রীয় নীতি ও মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়ে তৃণমূলের তরফে পিঁয়াজ উপহার দেওয়া হয়েছে।
২ জানুয়ারি তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবস। সেই উপলক্ষ্যে একাধিক কর্মসূচি রাখা হয়েছে। সেই কর্মসূচির অংশ হিসেবেই বছরের প্রথমদিন রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। উপস্থিত ছিলেন পুরসভার চেয়ারম্যান উত্তম দাস স্বয়ং। তিনি ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলরও বটে। শিবিরে রক্তদাতাদের বিনামূল্যে এক কেজি করে পিঁয়াজ দেওয়া হয়। সেই খবর চাউর হতেই রক্ত দিতে ভিড় জমে যায়। জানা গিয়েছে, মোট ৯২ জন রক্ত দেন। এদিকে বাজারে পিঁয়াজের দাম এখনও সেঞ্চুরির আশপাশে ঘোরাঘুরি করছে। এখনও জোগানও কম রয়েছে। এরমধ্যেই রক্তদানে পিঁয়াজ উপহার দেওয়া হয়।
রক্তদাতাদের পিঁয়াজ উপহার দেওয়া ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, রক্তদানের পরিবর্তে কোনও উপহার দেওয়া যাবে না। তারপরেও কী করে রক্তদান শিবিরে উপহার দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। প্রথম প্রশ্ন, রক্তদানের মতো মহতী উদ্দেশ্যে মানুষ যোগদান করেন স্বেচ্ছায়। সেখানে কেন দেওয়া হবে উপহারের টোপ? দ্বিতীয় প্রশ্ন, রক্তদানের পরিবর্তে এক কেজি পিঁয়াজ কেন? ওষুধ বা ফল বা পুষ্টিকর পথ্যও দেওয়া যেতে পারত। তৃতীয় প্রশ্ন, রক্ত দিন, পিঁয়াজ নিন, এই ব্যবসা করার অধিকার আয়োজকদের কারা দিল?
যদিও সমস্ত বিতর্ক উড়িয়ে বারাকপুরের পুর চেয়্যারম্যান উত্তম দাস জানিয়েছেন, “তৃণমূলের জন্মদিবস উপলক্ষ্যে একাধিক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। তারমধ্যে এই রক্তদান শিবিরও অন্যতম। তৃণমূলে একাধিক কেন্দ্রীয় নীতির বিরোধিতা করছে। এদিন মূল্যবৃদ্ধির প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে পিঁয়াজ উপহার দেওয়া হয়েছে। এতে তো বিতর্কের কিছু নেই।” অবশ্য ইতিপূর্বে গুজরাটের সুরাটেও একই ইস্যুতে বিতর্ক হয়েছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.