জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: মারণ ভাইরাস যাতে থাবা বসাতে না পারে, সেই কারণে ফকির ডেকে গ্রাম বাঁধিয়েছিলেন বাসিন্দারা। কিন্তু তা সত্ত্বেও ঠেকানো গেল না নোভেল করোনা ভাইরাসকে। আক্রান্ত হলেন গোপালনগর থানার শুভ রত্নপুরের এক যুবক। তাঁর নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে আসতেই আতঙ্ক কয়েকগুণ বেড়েছে গ্রামবাসীদের। বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যদের কথায়, স্রেফ কুসংস্কারের বশবর্তী হয়েই গ্রামের বাসিন্দারা ফকির ডেকে ছিলেন, এখন যুবক আক্রান্ত হতে অনেকের ভুল ভেঙেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আক্রান্ত যুবক কলকাতার একটি নার্সিংহোমে কর্মরত ছিলেন। ৯ মে কলকাতা থেকে গোপালনগরের বাড়িতে যান তিনি। এরপর অসুস্থ বোধ করলে পরিজনেরা তাঁকে বনগাঁ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই তাঁর লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়৷ সোমবার তার রিপোর্ট আসতেই জানা যায়, তিনি আক্রান্ত। এতেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সোমবার রাতেই ওই যুবককে কোভিড হাসপাতালে ভরতি করা হয়। যুবকের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। প্রতিবেশী কেয়ামত মণ্ডল বলেন, ওই যুবক বাড়িতে আসার পর থেকেই নিজেকে ঘরবন্দি করে রেখেছিল৷ কারও সঙ্গে মেলামেশা করতেন না।
মঙ্গলবার সকালে দমকল বিভাগের কর্মীরা আক্রান্তের বাড়ি ও তার আশপাশের এলাকা স্যানিটাইজ করেন। স্থানীয় যুবক কুতুবুদ্দিন মণ্ডল জানান, “মাসখানেক আগে গ্রামের মানুষ এক ফকিরকে ডেকে গ্রাম বেঁধেছিল। গ্রামকে বাঁচাতে এটা একটা সংস্কার।কিন্তু তাতেও আটকানো গেল না সংক্রমণ।” স্থানীয় বাবুর আলি মণ্ডল বলেন, “প্রত্যেক অগ্রহায়ণ মাসে আমাদের গ্রাম বাঁধা হয় এবারও হয়েছিল৷ কিন্তু তারপরও…..।” এ প্রসঙ্গে বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী মঞ্চের সম্পাদক প্রদীপ সরকার বলেন, “আমরা খবর পেয়েছিলাম করোনা ভাইরাস আটকাতে ফকির ডেকে গ্রাম বাধা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। আমরা ওঁদের বুঝিয়েছিলাম যজ্ঞ করে, পুজো করে, ফকির ডেকে গ্রাম বেধে করোনা ভাইরাস আটকানো সম্ভব নয়। হু (WHO) এর গাইডলাইন মেনে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখুন। প্রশাসনের তৈরি বিধিনিষেধ মেনে চলুন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.