শুভদ্বীপ রায়নন্দী, শিলিগুড়ি: বিজেপির (BJP) উত্তরকন্যা অভিযান প্রাণ গেল এক কর্মীর। পুলিশ-বিজেপি কর্মীদের খন্ডযুদ্ধের মাঝে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার ১২ ঘণ্টা উত্তরবঙ্গ বন্ধের ডাক দিয়েছে বিজেপি।
সোমবার বেলা ২ টো নাগাদ বিজেপির উত্তরকন্যা অভিযানকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় শিলিগুড়ির (Siliguri) তিনবাত্তি মোড়। আচমকা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন যুব মোর্চার কর্মীরা। পুলিশ-বিজেপি কর্মী ধস্তাধস্তিতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয় এলাকায়। তিনবাত্তি মোড়ের কাছে রাস্তায় বসে পড়েন যুব মোর্চার কর্মীরা। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে পুলিশের তরফে ঘোষণা করা হয়, ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে। জমায়েতকে ছত্রভঙ্গ হওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়। কিন্তু তাতে কর্ণপাত করেনি বিজেপির যুব মোর্চা। এরপরই বিক্ষোভকারীদের হটাতে প্রথমে টিয়ার গ্যাস ছোঁড়ে পুলিশ। পালটা আঘাত হানে বিজেপি কর্মীরা। জলকামান ছোঁড়ে পুলিশ। দু’পক্ষের আক্রমণ, পালটা আক্রমণে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়। সেখানেই ছিলেন শিলিগুড়ির আমবাড়ির মান্তাদাঁড়ির বাসিন্দা উলেন রায়।
জানা গিয়েছে, পুলিশের ছোঁড়া একটি রবার বুলেট লাগে বছর পঞ্চাশের ওই বুথ কর্মীর বুকে। একেবারে পায়ের সামনে ফাটে টিয়ার গ্যাসের সেল। যার জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তড়িঘড়ি তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ফুলবাড়ির একটি হাসপাতালে। সেখানেই ডাক্তাররা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে। কান্নায় ভেঙে পড়েছে পরিবার। মৃতের ভাইয়ের কথায়, “দাদা ব্যারিকেডের কাছে চলে গিয়েছিল। সেই সময় তিনটে রবার বুলেট গায়ে লাগে। টিয়ার গ্যাসের জন্য শ্বাসও নিতে পারছিল না। কোনওমতে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও আর বাড়ি ফেরাতে পারলাম না।” এই ঘটনার জেরে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন বিজেপির কর্মীরা। বিজেপিকে তোপ দেগে সাংসদ জয়ন্ত রায় বলেন, “এভাবেই গণতন্ত্রের কন্ঠরোধ করার চেষ্টা করছে শাসকদল। এভাবে চলতে পারে না।” পুলিশের ভূমিকার নিন্দা করেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ঘটনার প্রতিবাদের আগামিকাল ১২ ঘণ্টা উত্তরবঙ্গ বনধের ডাক দিয়েছে বিজেপি। যদিও মৃত্যুর ঘটনাটি অস্বীকার করেছেন গৌতম দেব। রাজ্য পুলিশের তরফে টুইটে বলা হয়েছে, “পুলিশ গুলি চালায়নি। লাঠিচার্জ করেনি। শুধু কাঁদানে গ্যাসের ব্যবস্থা ছিল। কীভাবে মৃত্যু হল তা ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে।”
Police showed restraint and didn’t do lathicharge or used fire arms. Only water cannons and tear gas were used to disperse the violent crowd. However, death of a person has been reported. Body is being sent for PM. The actual cause of death will be known only after the PM (2/2)
— West Bengal Police (@WBPolice) December 7, 2020
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.