তারক চক্রবর্তী, শিলিগুড়ি: উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলে রাজ্য সরকারের উচ্চশিক্ষা দপ্তরের মনোনীত সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পেলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্র। তাঁকে অধ্যাপক দ্যুতিষ চক্রবর্তীর জায়গায় মনোনীত করা হয়েছে। সোমবার রাতে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দপ্তরের তরফে একটি নির্দেশিকা জারি করে এই বিষয়টি জানানো হয়েছে। আগামীতে যে কোনও এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠকে রাজ্য সরকারের উচ্চশিক্ষা দপ্তরের তরফে ওমপ্রকাশবাবু উপস্থিত থাকবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনও ধরনের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে নিজের মতামতও রাখতে পারবেন তিনি।
মঙ্গলবার এই নির্দেশিকা হাতে পেয়েছেন প্রাক্তন উপাচার্য। যদিও এদিন বিকেল পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনও নির্দেশিকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে এসে পৌঁছয়নি বলে জানিয়েছেন বর্তমান উপাচার্য রথীন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “নির্দেশিকা হাতে পাওয়ার পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের সদস্যদের জন্য, সরকারি যে নিয়ম আছে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।” ওমপ্রকাশবাবু বলেন, “আমাকে উচ্চশিক্ষা দপ্তরের থেকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমার সময়কালে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একাধিক উন্ননয়মূলক পদক্ষেপ নিয়েছিলাম। সেই সকল কাজের অগ্রগতি সঠিক পদ্ধতিতে চলছে কি না তা খতিয়ে দেখতেই এই পদ দেওয়া হয়েছে।” তবে, সোমবার দুপুরে রথীন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দায়িত্ব দেওয়ার পর সেদিন রাতেই প্রাক্তন উপাচার্যকে রাজ্য সরকারের উচ্চশিক্ষা দপ্তরের তরফে নতুন দায়িত্ব দেওয়ার ঘটনা নিয়ে এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্তরে নানান জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে।
প্রাক্তন উপাচার্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন তাঁর একাধিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই বিরোধ করেছিলেন রথীনবাবু। এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের একাধিক বৈঠকে নিজের মতো করে মতামত প্রকাশ করেছিলেন বর্তমান উপাচার্য। সেই রথীনবাবু দায়িত্ব পাওয়ার দিনই ফের ওমপ্রকাশবাবুকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলে জায়গা দেওয়ায় নানান প্রশ্ন উঠেছে। এছাড়াও উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিদর্শনের পরে কলকাতায় ফিরে গিয়ে রাজ্যপাল উপাচার্য থাকাকালীন ওমপ্রকাশবাবুর নানা গতিবিধি নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বলেও খবর ছড়িয়েছিল। এরপরেও ফের ওই প্রাক্তন উপাচার্যকে এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলে রাজ্যের মনোনীত সদস্য হিসেবে পাঠানোকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশ ভালভাবে নিচ্ছে না।
প্রকাশ্যে কিছু মন্তব্য না করতে চাইলেও তাঁদের দাবি, তদন্তকে প্রভাবিক করতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকতে পারে। এছাড়াও রথীনবাবুর সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতেও তাঁকে নিয়োগ করা হতে পারে বলেও অনেকে মনে করছেন। যদিও এই বিষয়টিকে একেবারেই পাত্তা দিতে চাইছেন না প্রাক্তন উপাচার্য। কোনও কিছু প্রভাবিত করার জন্য বা কোনও সিদ্ধান্তে ব্যাঘাত ঘটানোর জন্য রাজ্য সরকার কাউকে মনোনীত করে না। তাঁর পালটা দাবি, রাজ্য উচ্চশিক্ষা দফতরের সিদ্ধান্ত একদিনে হয় না। দীর্ঘদিন ধরে আলোচনার পরেই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “রাজ্যের সিদ্ধান্ত একদিনে হয় না। যারা এমনটা বলছেন তাঁরা একেবারেই না জেনেই মন্তব্য করছেন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.