নন্দন দত্ত, সিউড়ি: তন্ত্রসাধনার জন্য গৃহকর্তাকে খুনের পরিকল্পনা বানচাল করে দিল পুলিশ। বীরভূমের সিউড়িতে অভিযুক্ত মা ও মেয়েকে গ্রেপ্তার করল সাঁইথিয়া থানা। রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে বছর সত্তরের বৃদ্ধকে। যদিও তন্ত্রসাধনার অভিযোগ উড়িয়ে পুলিশ সুপারের দাবি, পারিবারিক বিবাদের জেরেই এমন ঘটনা।
সাঁইথিয়া ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সুধাকর সূত্রধর পেশায় কাঠমিস্ত্রি। শুক্রবার রাতে রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি ছুটতে ছুটতে হাজির হন স্থানীয় ক্লাবে। ক্লাবের সদস্যরা দেখেন, সুধাকরবাবুর মাথা ফেটে রক্ত বেরচ্ছে। তিনি ভয়ে কাঁপছেন। সুধাকরবাবুর দাবি, তাঁকে এতদিন বন্দি করে রেখেছিল স্ত্রী, ছেলে ও ছেলের বউ। খুন করতে গিয়েছিল তাঁকে। ক্লাব সদস্যরা তাঁর চিকিৎসার জন্য সাঁইথিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভরতি করে দেন। তাঁর মাথায় চোট আছে। হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় স্ত্রী সরস্বতী, ছেলে ব্রজগোপাল ও মেয়ে কাঞ্চন সূত্রধরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন সুধাকরবাবু।
অভিযোগ, গত একবছর ধরে তাঁকে ঘরে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। দরজা-জানলা বন্ধ রেখে সেখানেই সুধাকরবাবুকে মেরে ফেলার চক্রান্ত করা হয়। সুধাকরবাবুর আরও দাবি, “স্ত্রী ও বউমা তন্ত্রসাধক। ঘরেই নানারকম সাধনা করেন। তারই অঙ্গ হিসাবে আমাকে বন্দি করে মেরে ফেলার চক্রান্ত করছিল। শুক্রবার কোনওরকমে ঘর থেকে বেরিয়ে বাইরে চলে আসি। বাইরে দেখে ছেলে ব্রজগোপাল ভোজালি হাতে ছুটে আসে। মেয়ে ও মা ছুটে আসে।” তাদের হাত থেকে পালিয়ে আসার সময় ভোজালির কোপে তাঁর মাথায় চোট লাগে।
যদিও পাড়ায় রটনা, বৃদ্ধকে নরবলি দেওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছিল তান্ত্রিক স্ত্রী। ঘরে গিয়ে দেখা যায়, তন্ত্রসাধনার নানা উপকরণ ছড়িয়ে আছে দেবতার থানে। শনিবার রাতেই অমাবস্যা। তারই আয়োজন চলছিল। শুক্রবার রাতে ঘটনার খবর জানতে পেরে অভিযুক্ত স্ত্রী ও মেয়েকে গ্রেপ্তার করেছে সাঁইথিয়া থানার পুলিশ। পুলিশ সুপার শ্যাম সিং জানিয়েছেন, সম্পূর্ণ পারিবারিক বিবাদ। সুধাকরবাবুর সঙ্গে তাঁর পরিবারের সদস্যদের বনিবনা হচ্ছিল না। তারই জেরে মারামারি। তন্ত্রসাধনার জন্য হেনস্তার বিষয়টি সম্পূর্ণ গুজব বলে দাবি তাঁর।
ছবি: সুশান্ত পাল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.