শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: অন্ধকার নামলেই মনের মধ্যে বাসা বাঁধত ভয়। ভূতের ভয়! চোখ বন্ধ করলেই চারপাশে ঘুরে বেড়াত অশরীরী আত্মা। দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীর মনের ভয় কাটাতে বাড়িতে তান্ত্রিক ডেকে আনে পরিবার। মনের ভয় তাড়াতে গিয়ে সেই তান্ত্রিকের যৌন লালসার শিকার হতে হল কলেজ ছাত্রীকে। ধূপগুড়ি ব্লকের গধেয়ার কুঠি গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাণ্ডানি গ্রামের ঘটনা। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত তান্ত্রিক পরিতোষ রায়কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শারীরিক পরীক্ষার জন্য ছাত্রীকে জলপাইগুড়ি জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। ঘটনায় মানসিক এবং শারীরিক ভাবে ভেঙে পড়ায় চিকিৎসার জন্য তাঁকে হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, মাসখানেক ধরে ভূতের ভয় চেপে বসে ছাত্রীর মনে। সন্ধে নামলেই ভয়ে সিঁটিয়ে থাকত সে। ঘর থেকে দু’পা বের হওয়া দূরে থাক, কেউ কথা বলতে গেলেই মনে হত অশরীরী আত্মা দাঁড়িয়ে আছে। মাথায় উঠেছিল পড়াশোনা। ধূপগুড়ি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীর এই অবস্থায় চিন্তায় পড়ে যায় গোটা পরিবার। পরিত্রাণ পেতে পরিতোষ রায় নামে এক তান্ত্রিককে ধরে আনেন তাঁরা। প্রতিবেশী কমল রায় জানান, পেশায় ঝালমুড়ি বিক্রেতা হলেও তন্ত্রমন্ত্র করে ভূত প্রেত ছাড়াতে পারে বলে নামডাক রয়েছে পরিতোষের। তবে এই ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটাবে, তা ভাবতেই পারছেন না তাঁরা। জানা গিয়েছে, মন থেকে ভূতের ভয় কাটাতে বন্ধ ঘরে ছাত্রীকে নিয়ে বৃহস্পতিবার রাত থেকে তন্ত্রমন্ত্র শুরু করে পরিতোষ তান্ত্রিক। প্রথম দু’দিন সন্দেহ না হলেও ঘরের দরজা না খোলায় তৃতীয় দিন শনিবার রাতে সন্দেহ হয় পরিবারের লোকজনের। ডাকাডাকির পরেও সাড়া না পেয়ে ঘরের দরজা ভেঙে আপত্তিকর অবস্থায় তান্ত্রিককে দেখে ফেলেন তাঁরা। মেঝেতে তখন প্রায় সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়েছিল ছাত্রী। সুযোগ বুঝে ওঝা পালিয়ে গেলেও ছাত্রীর মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে রাতেই তান্ত্রিক পরিতোষকে গ্রেপ্তার করে ধূপগুড়ি থানার পুলিশ।
ধূপগুড়ি থানার আইসি সুবীর কর্মকার জানান, নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই তান্ত্রিক পরিতোষ রায়কে গ্রেপ্তার করেছেন তাঁরা। রবিবার তাকে জলপাইগুড়ি আদালতে তোলা হলে বিচারক জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.