Advertisement
Advertisement
কাজ

মানুষের দরজায় সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে রাত জাগছে পুরুলিয়া প্রশাসন

রাতে গ্রামে গ্রামে ঘুরে আর্থিক বেনিয়ম হচ্ছে কি না, নজর রাখছেন আধিকারিকরা৷

Officers of district administration in Purulia work at night even
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:June 16, 2019 6:52 pm
  • Updated:June 16, 2019 8:49 pm  

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: দশটা-পাঁচটার বাঁধাধরা কাজ নয়। সদ্যসমাপ্ত লোকসভা ভোটে জেলায় জেলায় দলের ভরাডুবির পর একেবারে তৃণমূল স্তরে গিয়ে জনসংযোগের কড়া নির্দেশ আগেই দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ মানুষের মন বুঝে, সমর্থন ফিরে পেতে সেটাই তাঁর কাছে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার বলে মনে হয়েছিল৷ আর সেই নির্দেশ মেনেই পুরুলিয়ায় আমজনতার মন পেতে ‘গো টু ভিলেজ’ কর্মসূচিতে আরও তৎপর হল প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের টিম এবার ব্লকস্তরে আধিকারিকদের নিয়ে রাতের অন্ধকারে গাঁ-গঞ্জের পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন৷

[আরও পড়ুন: গায়ের রং নিয়ে নিত্য শ্বশুরবাড়ির গঞ্জনা, অভিমানে আত্মঘাতী বধূ]

সরকারি প্রকল্পে কোনও বেনিয়ম হচ্ছে না তো? সরকারি পরিষেবা থেকে কি বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ? গ্রামে গ্রামে ঘুরে এসবের প্রকৃত ছবিটা বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করছেন আধিকারিকরা৷ জঙ্গলমহলের মানুষের সঙ্গে একাত্ম হতে পাহাড়–জঙ্গল ঘেরা গ্রামগুলিতে রাতও কাটাবে প্রশাসন। পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনের এই ‘গো টু ভিলেজ’ কর্মসূচি শুরু হয়েছে শনিবার থেকে, বাঘমুন্ডি ব্লক থেকে৷ প্রতি ব্লকেই ১৫ দিন ধরে এই ‘গো টু ভিলেজ’ হবে। আর তাতেই কার্যত রাতেও অফিসের কাজই করতে হবে প্রশাসনিক আধিকারিকদের। প্রত্যেক ব্লকে এর তদারকি করবেন জেলার বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকরা। তাঁদের নেতৃত্ব দেওয়া দায়িত্ব মহকুমাশাসক-সহ অতিরিক্ত জেলাশাসক পদমর্যাদার আধিকারিকদের উপর।

Advertisement

ভোটের আগে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন এইভাবেই ব্লক ভিত্তিক গ্রামে-গ্রামে টিম নিয়ে বৈঠক করে সমস্যার কথা জেনেছিলেন৷ সেইমতো পরিষেবাও দেওয়া হয়েছিল৷ এবার সেই কাজকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে রাত জাগছে প্রশাসন।সকাল দশটা-পাঁচটা অফিস করার বাইরে এবার জেলা প্রশাসন আমজনতার সুবিধা-অসুবিধা জানতে একেবারে হেঁশেল পর্যন্ত পৌঁছে যাবে। পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘আমরা সাধারণ মানুষজনের সঙ্গে একাত্ম হতে চাই। রাজ্য সরকারের যে সব প্রকল্প চলছে, তার সুবিধা তৃণমূল স্তর পর্যন্ত পৌঁছচ্ছে কিনা, সেটা আমরা এলাকায় গিয়ে সরাসরি মানুষজনের কথা বলে বুঝে নিতে চাইছি। তাঁদের কী দাবি? তাঁরা কী চাইছেন? সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’

go-to-village-2

অযোধ্যা পাহাড়ের মাথায় জিলিংটাঁড়, রাঙা, তেলিয়াভাসা একের পর এক গ্রামে পৌঁছে যান প্রশানিক কর্তারা৷ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, রেশন দোকান, শৌচাগার, একশো দিনের কাজ, মিড-ডে মিল নিয়ে আমজনতার কাছে গিয়ে সরকারি সুবিধা মিলছে কি না, তার খোঁজ নেন জেলাশাসক নিজে৷ রাঙা গ্রামে নিয়মিত রেশন দোকান না খোলায় জেলাশাসকের ধমকও খেলেন ডিলার। নির্মানের পরেও ঝাঁ–চকচকে তেলিয়াভাসা প্রাথমিক স্বাস্হ্য কেন্দ্র চালু না হওয়ায় সেখান থেকেই জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে  ফোনে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিলেন। অযোধ্যা পাহাড়ের ওই এলাকায় ব্যাংক নেই৷ তাই সেখানকার মানুষকে যাতে পঁচিশ কিলোমিটার দূরে যেতে না হয়, গ্রাম পঞ্চায়েত থেকেই যাতে ব্যাংকে জমানো টাকা হাতে পান, সেই ব্যবস্থা করার চিন্তা ভাবনাও চলছে৷ লক্ষ্য একটাই, সরকারি পরিষেবা একেবারে দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া।

[আরও পড়ুন: টাকা না দেওয়ায় ট্রাকচালককে বেধড়ক মারধর, দাদপুরে পুড়ল পুলিশের আউটপোস্ট]

রাতের অন্ধকারে কোনও সরকারি প্রকল্প ঘিরে বেনিয়ম হচ্ছে কি না, সেটা যেমন পর্যবেক্ষণের বিষয়, তেমনই রাতেও যে সমস্ত পরিষেবা বিধি মেনে দেওয়া হচ্ছে কি না, প্রশাসনের টিম কার্যত রাত জেগে সেই বিষয়টিও দেখবেন। গত ন’ বছরে রাজ্য সরকার জঙ্গলমহলের এই জেলায় ঢালাও উন্নয়নের কাজ করলেও শাসকদলের প্রতি আমজনতার আস্থা অটুট কি না, তা জানতে রাতে গ্রামে থেকে একাত্ম হয়ে জঙ্গলমহলের মন বুঝবে প্রশাসন। এই কাজেই শনিবার বিকালে জেলা প্রশাসনের টিম নিয়ে বাঘমুন্ডি যান জেলাশাসক। বাঘমুন্ডি ব্লকেই সন্ধ্যা সাতটা থেকে রাত ন’টা পর্যন্ত প্রশাসনিক বৈঠক করে আধিকারিকদের নিয়ে পাথরডি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিদর্শন করেন জেলাশাসক।

ছবি: অমিত সিং দেও৷

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement