নবেন্দু ঘোষ, বসিরহাট: গ্ল্যামার জগতের বাইরে বেরিয়ে অন্য ভূমিকায় নেমেছেন৷ নতুন ক্ষেত্রটিতে পারফরম্যান্স কেমন? তা তো বোঝা যাবেন মাস খানেক পর৷ কিন্তু নবতম ভূমিকায় সফল হতে যে মনোযোগের বিন্দুমাত্র খামতি নেই, তা বেশ টের পাওয়া যাচ্ছে নুসরত জাহানকে দেখে৷ বসিরহাটের তৃণমূল প্রার্থী নুসরত নাম ঘোষণার পর থেকেই আঁটঘাট বেঁধে প্রচারে নেমেছেন৷ বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়িয়ে প্রচারের পর রবিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন নুসরত৷ সঙ্গে ছিলেন বিধায়ক দীপেন্দু বিশ্বাস-সহ স্থানীয় নেতৃত্ব
প্রায় সাড়ে আট মিনিটের সাংবাদিক বৈঠকে পাওয়া গেল অন্য নুসরতকে৷ সাংবাদিকদের সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন হাসিমুখে৷ কোথাও কোনও আড়ষ্টতা নেই, অস্বস্তি নেই, বিরক্তি নেই৷ বসিরহাটের মতো জায়গায় প্রচারের কর্মসূচি ঠিক কেমন? উত্তরে তারকা প্রার্থীর খুব স্পষ্ট কথা, ‘সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে দেখেছি, চাহিদা বেশি নয়৷ মানুষ শান্তিপূর্ণ জীবন কাটাতে চান, খেয়ে’পরে থাকতে চান৷ তৃণমূল সরকার সেটা করেছে, সকলেই সেটা দেখেছেন৷ আমি এঁদের শান্তিপূর্ণ জীবন দিতে চাই৷’ এলাকার মূল সমস্যা কী, সে সম্পর্কে কি অবহিত তারকা প্রার্থী? এল চটজলদি উত্তর৷ এখানে জলের সমস্যাই সবচেয়ে বেশি৷ রাস্তাঘাটের হালও কিছুটা খারাপ৷ সেসব সমস্যা মিটিয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে তোলাই লক্ষ্য বলে জানালেন নুসরত৷ বসিরহাট যেহেতু বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া জায়গা, তাই প্রশ্ন উঠল দুই বাংলার সম্পর্ক নিয়েও৷ আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের মতো পরিণত জবাবে তারকা প্রার্থী বললেন, ‘আমরা আন্তর্জাতিক শান্তির পক্ষে৷ ওপার বাংলা তো আলাদা দেশ নয়, আমাদেরই অংশ৷ আর সুন্দরবন তো বিশ্বের ঐতিহ্য৷ তাকে রক্ষা করা কর্তব্য৷ এখানকার জনপ্রতিনিধি হয়ে এলে, এসব কাজ গুরুত্ব দিয়ে করব৷’
এসব তো গেল প্রচার সংক্রান্ত রুটিনমাফিক প্রশ্নোত্তর৷ দ্বিতীয় পর্বে সাংবাদিকদের তরফে ধেয়ে এল চোখা চোখা রাজনৈতিক প্রশ্ন৷ বসিরহাটের মাটিতে নতুন প্রার্থী, বিরোধীদের ঠিক কতটা সমঝে চলছেন? এতে নুসরতের সরল জবাব, ‘বিরোধীরা কে বা কারা, তা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না৷ নিজের কাজটুকু ভালভাবে করে যেতে চাইছি৷’ কিন্তু ভোট মানে তো একটা লড়াই, তা কীভাবে নিচ্ছেন? এখানে সৌজন্যের সুর শোনা গেল নুসরতের গলায়৷ বললেন, লড়াই কারও বিরুদ্ধে নয়৷ নিজেদের মধ্যে লড়াই করে লাভ নেই৷ বসিরহাটের মানুষের জন্য একযোগে কাজ করতে হবে৷ বসিরহাটের বিদায়ী সাংসদ ইদ্রিশ আলিকে প্রচারে দেখা যাচ্ছে না কেন? এমন খটমট প্রশ্নের উত্তর কিন্তু বেশ সাবলীলভাবেই দিলেন তারকা প্রার্থী৷ জানালেন, ইদ্রিশ আলি অন্যত্র ব্যস্ত, তাই প্রচারে থাকতে পারছেন না৷
এরপর এল দৈনন্দিন রুটিনের কথা৷ এই গরমে ভোটের প্রচার, কীভাবে সামলাচ্ছেন সব? হেসে উত্তর দিলেন অভিনেত্রী, বাড়ির তৈরি ভাত-ডাল-মাছের উপরেই থাকছেন৷ তাতেই সুস্থ রয়েছেন৷ সবমিলিয়ে, বহিরাগত হয়েও ঘরের মেয়ের মতোই বসিরহাটবাসীর সঙ্গে মিশে যেতে চাইছেন তৃণমূলের তারকা প্রার্থী৷ আশ্বাস দিচ্ছেন, ভোটযুদ্ধে হারজিত যাই-ই হোক, বসিরহাটের সঙ্গে যে সম্পর্ক তৈরি হল, তা বজায় রাখবেন৷ বসিরহাটবাসী নুসরতকেই দেখতে চান দিল্লির সংসদ ভবনে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.