শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: রাজ্য সরকারের দেওয়া স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের (Students Credit Card) সাহায্যেও ঋণ মেলেনি। ভিন রাজ্যে নার্সিং পড়তে গিয়ে মাঝপথে সেমেস্টারের টাকা দিতে পেরে বিপাকে পড়েন পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণার (Chandrakona) এক ছাত্রী। সেই হতাশায় বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হলেন তিথি দোলুই নামে ১৯ বছরের ছাত্রীটি। বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। সেই খবর বাড়িতে পৌঁছতেই নেমে আসে শোকের ছায়া। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
চন্দ্রকোণা পুরসভার ১২নং ওয়ার্ডের জহরপুকুর এলাকার বাসিন্দা জয়দেব দোলুইয়ের মেয়ে তিথি। উচ্চমাধ্যমিক পাশের পর বেঙ্গালুরুর (Bangalore) অ্যাসটর স্কুল অফ নার্সিংয়ে ভরতি হন। প্রথম সেমেস্টারের জন্য ১ লক্ষ টাকা জোগাড় করে দিয়েছিলেন। এরপর তিথি রাজ্য সরকারের স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ব্যাংকে ঋণের জন্য আবেদন জানান। আশা ছিল, নার্সিং ট্রেনিংয়ের বাকি খরচ সেই ঋণের মাধ্যমে মিটিয়ে দিতে পারবেন। কিন্তু স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া (SBI), চন্দ্রকোণা শাখার তরফে তিথির সেই ঋণ নেওয়ার আবেদন নাকচ করা হয়।
ব্যাংকের তরফে আবেদন খারিজের কারণ হিসেবে জানানো হয়, তিথি বেঙ্গালুরুতে যে কলেজে ভরতি হয়েছিলেন, সেই অ্যাসটর স্কুল অফ নার্সিংয়ের রেজিস্ট্রেশন নেই। অর্থাৎ ইন্ডিয়ান নার্সিং কাউন্সিলের অনুমোদিত নয় সেটি। ফলে ব্যাংক তিথিকে ঋণ দিতে অপারগ বলে জানায়। এতেই স্পষ্ট হয়, তিথি বেঙ্গালুরুতে ভুয়ো নার্সিং প্রতিষ্ঠানের পাল্লায় পড়েছেন। ফলে সবমিলিয়ে তিথি অত্যন্ত হতাশ হয়ে পড়েন। ঋণ না পাওয়ায় সেমেস্টারের টাকাও দিতে পারেননি। এরপরই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন তিথি।
পরিবার সূত্রে খবর, ১০ দিন আগে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিথি। তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে চন্দ্রকোণা মহকুমা হাসপাতালে ভরতি করা হয়। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার সকালে মৃত্যু হয় তিথির। পরিবারে নেমে আসে শোকের ছায়া। দরিদ্র পরিবার কোনওক্রমে লক্ষাধিক টাকা জোগাড় করে মেয়েকে নার্সিং কলেজে ভরতি করিয়েছিল পরিবার। কিন্তু শেষমেশ ভুয়ো প্রতিষ্ঠানের শিকার হয়ে এভাবে মেয়েকে হারাতে হল! কোনও স্বান্তনা নেই পরিবারের কাছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.