সৌরভ মাজি ও অর্ণব আইচ: অ্যাম্বুল্যান্স কাণ্ডে বর্ধমানের অন্নপূর্ণা নাসিংহোমের মালিক-সহ ২ জনকে গ্রেপ্তার করল পূর্ব যাদবপুর থানার পুলিশ। শনিবার রাতে ধৃত অ্যাম্বুল্যান্স চালক ও ভুয়ো ডাক্তারকে নিয়ে নার্সিংহোমে হানা দেয় পুলিশ। রাতভর চলে তল্লাশি। দীর্ঘক্ষণ ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় নার্সিংহোম কর্তাদের। নার্সিংহোমের মালিক অনিমেষ মল্লিক ও ম্যানেজার শেখ রাহুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্ধমানের অন্নপূর্ণা নার্সিংহোমের সিসিটিভি ফুটেজ ও হার্ডডিস্ক বাজেয়াপ্ত করেছেন তদন্তকারীরা। তদন্তে ভিকি নামে এক দালালের নামও ওঠেছে এসেছে। তাঁকে খুঁজছে পুলিশ।
[অ্যাম্বুল্যান্সে ডাক্তারের বেশে ‘এসি মেকানিক’, মৃত্যু মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর]
বীরভূমের নলহাটির বাসিন্দা অরিজিৎ দাস মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। পরীক্ষা চলাকালীন অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। জ্বর ও কোম়রের যন্ত্রণায় ভুগছিল অরিজিৎ। কোনওমতে তিনটি পরীক্ষা দিতে পেরেছিল সে। চতুর্থ পরীক্ষার আগে অসুস্থতা এতটাই বেড়ে যায়, যে নলহাটির একটি নার্সিংহোমে ভরতি করতে হয় ওই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে। কিন্তু, শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার অরিজিৎকে স্থানান্তরিত করা হয় রামপুরহাটের একটি নার্সিংহোমে। পরে তাঁকে আনা হয় বর্ধমান শহরের অন্নপূর্ণা নার্সিংহোমে। পরিবারের লোকেরা জানিয়েছে, ওই নার্সিংহোমে চিকিৎসা না পেয়ে, অরিজিৎ কলকাতার আনার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। ভাড়া করা হয় একটি আইসিসিইউ অ্যাম্বুল্যান্সও। পরিবারের লোকেদের দাবি, অন্নপূর্ণা নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষই অ্যাম্বুল্যান্সটি ঠিক করে দেয়। অ্যাম্বুল্যান্সে পরিবারের দু’জনের বেশি সদস্য উঠতে দেওয়া হয়নি। আইসিসিইউ অ্যাম্বুল্যান্সের অজুহাতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন চিকিৎসক ও চালক। কিন্তু, অরিজিৎ দাসকে বাঁচানো যায়নি। বর্ধমান থেকে কলকাতা আসার পথেই মারা যায় ওই কিশোর। পরিবারের লোকেরা জানতে পারেন, অ্যাম্বুল্যান্স চিকিৎসকের বেশে যিনি ছিলেন, তিনি আসলে এসি মেকানিক! আর রোগীর অক্সিজেন কমানো বাড়ানোর কাজ করছিলেন অ্যাম্বুল্যান্স চালক!
[পরীক্ষাকেন্দ্রে উত্তর না বলায় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের উপর হামলা পড়ুয়াদেরই]
পরিবারের লোকেদের অভিযোগ, চিকিৎসায় গাফিলিতে মৃত্যুতে হয়েছে ওই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। পরিবারের লিখিত অভিযোগে ভিত্তিতে অ্যাম্বুল্যান্স চালক ও ভুয়ো চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করেছে পূর্ব যাদবপুর থানার পুলিশ। শনিবার রাতে তাঁদের নিয়েই বর্ধমানে অন্নপূর্ণা নার্সিংহোমে হানা দেন তদন্তকারীরা। রাতভর চলে তল্লাশি। হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ ও হার্ড ডিস্ক বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। দীর্ঘ জেরার পর নার্সিংহোম মালিক অনিমেশ মল্লিক ও ম্যানেজার শেখ রাহুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পূর্ব যাদবপুর থানার পুলিশ। তদন্তে বিজয় রাম ওরফে ভিকি নাম এক ব্যক্তির নাম উঠেছে। তদন্তকারী জানিয়েছেন, বর্ধমানের বিভিন্ন নার্সিংহোমের সঙ্গে অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের যোগাযোগ করিয়ে দিতেন এই ভিকি-ই। তাঁর সন্ধানে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
ছবি: মুকুলেসুর রহমান
[পা ভেঙে রাস্তার পাশে, ৪ দিন পর চিকিৎসার সুযোগ পেলেন মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলা]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.