Advertisement
Advertisement
Nadia

‘মৃত’ সদ্যোজাতকে প্লাস্টিকে ভরে বাড়ি পাঠাল নার্সিংহোম, বাড়ি যেতেই নড়ে উঠল শিশু

মৃত ভেবে গামলায় ফেলে রাখা হয়েছিল সদ্যোজাতকে।

Nursing home assumes alive child as dead in Nadia | Sangbad Pratidin
Published by: Paramita Paul
  • Posted:April 11, 2023 7:48 pm
  • Updated:April 11, 2023 11:32 pm  

বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: ঘাটালের পর আবারও চিকিৎসার চরম গাফিলতির নিদর্শন নদিয়ায়। সদ্যোজাতকে মৃত ভেবে রেখে দেওয়া হয়েছিল মায়ের বেডের নিচে একটি গামলার মধ্যে। অভিযোগ, বাড়ির লোককে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, সদ্যোজাতকে দেখে কোনও লাভ নেই। কোনও চিকিৎসা হবে না। বাড়ির লোককে বলা হয়, একটি প্লাস্টিক ব্যাগ কিনে আনতে। শেষপর্যন্ত সেই প্লাস্টিক ব্যাগে ভরে সদ্যোজাতকে তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে। মৃত ভেবে সন্তানকে নিয়ে বাড়ি চলে যান। বাড়িতে গিয়ে দেখেন, তাদের সন্তান দিব্যি জীবিত। রীতিমতো নড়াচড়া করছে এবং কাঁদছে। এই ঘটনায় নদিয়ার কৃষ্ণনগরের লক্ষীকান্ত মৈত্র রোডের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।

সদ্যোজাতকে বাঁচাতে ছুটে যান কৃষ্ণনগরের সেই নার্সিংহোমে। কিন্তু সেখানে কোনও সুরাহা হয়নি। তাই তাঁরা একরত্তিটিকে কৃষ্ণনগর সদর হাসপাতালে ভরতি করেন। বর্তমানে সে হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন রয়েছে। সদ্যোজাতর বাবা শঙ্কর দাস এবং মা সুনীতা দাস। তাঁদের বাড়ি নদিয়ার নাকাশিপাড়া থানার কালাবাগান গ্রামে। শঙ্কর তাঁর স্ত্রীকে সোমবার বেলা দুটো নাগাদ কৃষ্ণনগরের ওই নার্সিংহোমে ভরতি করিয়েছিলেন। বেলা চারটে নাগাদ সুনীতাদেবী পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। সদ্যোজাতর মামী রাখি দাস নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চরম গাফিলতির অভিযোগ করেছেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক এবং ওই নার্সিংহোমের সিস্টারদের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তিনি।

Advertisement

[আরও পড়ুন: অন্যের বউকে লুকিয়ে বিয়ে করে বিপাকে যুবক, ভালবাসা ফিরে পেতে দ্বারস্থ দিদির দূতের!]

তিনি অভিযোগ করেন,”আমার ননদকে নার্সিংহোমে ভরতি করানোর পর ওরা সিজার করার কথা বলেছিল। তাতে আমরা রাজি হয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু সিজার করার আগেই আমাদের বলে,বাচ্চা বাঁচবে না। সিজার করার পর জীবন্ত বাচ্চার জন্ম হলেও তারা সেই একই কথা বলতে থাকে। কিন্তু আমরা বলি, কিছু তো পদ্ধতি বার করা যেতে পারে। তা না হলে রেফার করে দিন। কিন্তু ওরা রেফার করেনি। এমনও বলে,যেখানেই নিয়ে যাও, বাচ্চা বাঁচবে না। কিন্তু যতক্ষণ জান আছে,ততক্ষণ তো চিকিৎসা করা যেতে পারে। তা না করে বাচ্চার মায়ের বেডের নিচে একটি গামলার মধ্যে বাচ্চাটিকে রেখে দিল।” তিনি আরও বলেন, ” ওই অবস্থায় আমরা বাচ্চাকে বাড়ি নিয়ে যেতে চাই। বেশ কয়েকটি জায়গায় সই করিয়ে একটি প্লাস্টিক ব্যাগ কিনে আনতে বলে। সেই প্লাস্টিক ব্যাগে ভরেই আমরা বাচ্চাটিকে বাড়ি নিয়ে গেলেও দেখতে পাই, বাচ্চা তখনও জীবন্ত। ওরা ঠিকমতো চিকিৎসা করেনি।” একই অভিযোগ করেছেন সদ্যোজাতর বাবা শংকর দাসও। তাঁর জানিয়েছেন, “শেষপর্যন্ত কৃষ্ণনগরে এসে সদর হাসপাতালে বাচ্চাকে ভরতি করাই। কাঁচের ঘরে রেখে আমার বাচ্চার চিকিৎসা চলছে।”

যদিও এই বিষয়ে ওই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের সাফাই,”বাচ্চা জন্মর পর হার্টবিট পাওয়া যায়নি। বাচ্চাটিকে মৃতই ধরে নেওয়া হয়েছিল। বাড়ির লোকজন বাচ্চাটিকে নিজেরাই বাড়িতে নিয়ে যাবার জন্য জোর করে। ওরা নিজেরাই লিখে দিয়েছে, সৎকারের জন্য বাচ্চাটিকে তারা নিয়ে যেতে চায়। ওদের অনুরোধের জন্যই বাচ্চাটিকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হই।” তাঁদের আরও সংযোজন, “রোগীর বাড়ির লোকজন ফোর্স করার জন্যই আমরা ছাড়তে বাধ্য হয়েছি।” যদিও এই বিষয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা: জ্যোতিষচন্দ্র দাসের বক্তব্য,’আমার কাছে কেউ মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ করেননি বা আমাদের অফিসে জমা দেননি। জমা দিলে ওই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের লাইসেন্স কীভাবে হয়েছে,সেটা খতিয়ে দেখব। অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

[আরও পড়ুন: জেলে থাকাকালীন ‘জঙ্গি’ তকমা! শওকত মোল্লার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা নওশাদের]

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement