অর্ক দে, বর্ধমান: গার্হস্থ্য হিংসার শিকার হয়ে ডান হাত কব্জির নিচ থেকে হারিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কৃত্রিম হাতের ব্যবস্থা করে দেন। এবার সেই কৃত্রিম হাতে লিখে ফেললেন সেই যন্ত্রণার, কষ্টের, নির্মমতার কথা। মলাটবন্দি হয়ে প্রকাশ পাবে রেণুর আত্মকথা।
রেণু খাতুন। শিরদাঁড়া সোজা রেখে লড়াইয়ের নাম। রেণুর প্রতি হওয়া নির্মম ঘটনা শুনলে আজও শিউরে উঠতে হয়। গত বছর জুন মাসে পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের রেণু খাতুন সরকারি নার্সের চাকরি পেয়েছিল। নিজের পায়ে দাঁড়াতে চেয়েছিল। কিন্তু বাদ সেধেছিল প্রেম করে যাকে বিয়ে করেছিলেন সেই স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজন। কিন্তু রেণু তাঁর লক্ষ্যে অবিচল ছিলেন। রুখে দাঁড়িয়েছিল তাঁর প্রতি হওয়া অন্যায়ের বিরুদ্ধে। কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে রাতের বেলা রেণু ডান হাত কব্জির নিচ থেকে কেটে দিয়েছিল স্বামী। বর্বরোচিত এই ঘটনায় নিন্দার ঝড় ওঠে। মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে রেণুর যাবতীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করে সরকার। একইসঙ্গে রেণু সুস্থ হওয়ার পর তাকে স্বাস্থ্যদপ্তরে চাকরিও দেওয়া হয়।
তার আগেই হাসপাতালের শয্যায় বাঁ হাতে লেখা অভ্যাস করেছিলেন রেণু। চাকরিতে যোগ দিয়ে বাঁ হাতেই স্বাক্ষর করেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রেণুর কৃত্রিম হাতের ব্যবস্থা করা হয়। যাবতীয় খরচ বহন করে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদ। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কৃত্রিম হাতের প্রতিস্থাপন করা হয়। রেণুর সেই কাহিনীই এবার ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হতে চলেছে। কলকাতার একটি প্রকাশনা সংস্থা গার্হস্থ্য হিংসার মর্মান্তিক ঘটনা মলাটবন্দি করেছে। তাতে থাকছে রেণুর আত্মকথা। রেণুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “সমাজের অনেক মহিলার সঙ্গেই প্রতিনিয়ত গার্হস্থ্য হিংসার ঘটনা ঘটে চলেছে। অনেক সময়েই এই সমস্ত ঘটনা প্রকাশ্যে আসে না। তাদের কথাও তুলে ধরা হয়েছে এই বইটিতে। একইসঙ্গে আমার জীবনের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।” আজ অর্থাৎ শনিবার কলকাতায় একটি অনুষ্ঠানে বইটি উদ্বোধন হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.