প্রতীকী ছবি।
নন্দন দত্ত, সিউড়ি: হাসপাতালেই সহকর্মী তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার ন্যায়বিচারের দাবিতে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের আবহেই এবার সহকর্মী নার্সকে ধর্ষণের অভিযোগে নাম জড়াল এক চিকিৎসকের। রামপুরহাট মহকুমার মুরারই ব্লকের চাতরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই চয়ন মুখোপাধ্যায় নামে ওই চিকিৎসক ডিউটিতে থাকাকালীন তাঁকে ধর্ষণ করেন বলে নির্যাতিতা নার্স শনিবার লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। বীরভূমের পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় জানান, ‘‘অভিযোগ নিয়ে নির্যাতিতার বয়ান নেওয়া হয়েছে। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।’’এদিকে অভিযুক্ত ওই চিকিৎসক আপাতত ফেরার। প্রশাসনের সর্বোচ্চ মহল থেকে তাঁকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এদিকে, আর জি কর হাসপাতালের পর ফের স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই নার্স ধর্ষিতা হওয়ার অভিযোগ ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
শনিবার লিখিত অভিযোগে নির্যাতিতা নার্স জানিয়েছেন, ওই চিকিৎসক প্রায়ই তাঁকে উত্ত্যক্ত করতেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভিতরেই তাঁকে একা পেয়ে ধর্ষণ করেন ওই চিকিৎসক। পুরো বিষয়টি প্রশাসনিকভাবে চেপে রাখার চেষ্টা হয়। কিন্তু নার্সদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে কলকাতা থেকে এই ঘটনার কথা জানাজানি হতেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিরাপত্তার দাবিতে সরব হন নার্সরা। জানা গিয়েছে, ২০২১ সালে সরকারি চিকিৎসক হিসাবে চাতরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগ দেন কোলঘাটের বাসিন্দা ওই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক।
নির্যাতিতা নার্সও গত সাত বছর ধরে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই কর্মরত। দুজনেই বিবাহিত। শনিবার আক্রান্ত ওই নার্স লিখিতভাবে মুরারই ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অভিজিৎ মণ্ডলকে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ জানান। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সঙ্গে সঙ্গে নির্যাতিতা নার্স ও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শোভন দে-কে সঙ্গে নিয়ে রামপুরহাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে মহকুমা পুলিশ আধিকারিক গোবিন্দ শিকদার ও মহিলা পুলিশ অফিসাররা মিলে থানাতেই নার্সকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, গত তিন বছর ধরে ওই নার্সের সঙ্গে ওই চিকিৎসকের একটা সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। তার পরেও কেন এমন ঘটল তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলের অনেকেই সন্দিহান। মুরারইয়ের বিধায়ক তথা চিকিৎসক মোশারফ হোসেন এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমি বিষয়টি শুনেছি। এটা অনভিপ্রেত। একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মরত অবস্থায় একজন সহকর্মীর হাতে ধর্ষিতা হবেন এক মহিলা, তা মেনে নেওয়া যায় না। প্রাথমিক অভিযোগ এসেছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।’’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কোলাঘাটের স্থায়ী বাসিন্দা ওই চিকিৎসক মুরারইয়ে একটি ভাড়াবাড়িতে থাকেন। সেখানেই রাতে হানা দেয় পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.