ছবি: প্রতীকী
অভিরূপ দাস: মায়ের কোলে খেলার সময় ব্লাউজে থাকা হুক গিলে ফেলেছিল শিশু। শ্বাসকষ্টে ছটফট করছিল। কিচ্ছু খেতে পারছিল না। এমন অবস্থা চলতে থাকলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারত একরত্তির। জটিল অস্ত্রোপচারে শিশুর প্রাণ বাঁচাল নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল (NRS)।
এক বছরের ওই শিশুর নাম নিশাত সাবা। বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার কাঁকেপাড়ায়। সপ্তাহ দু’য়েক আগে খেলতে খেলতেই ব্লাউজের ধাতব হুক শিশুর গলায় আটকে যায়। প্রথমটায় কিচ্ছু টের পাননি তার মা-বাবা। শ্বাসকষ্টে ছটফট করছিল একরত্তি। খেতে পারছিল না কিচ্ছু। তড়িঘড়ি শিশুকে নিয়ে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে আসেন অভিভাবকরা।
কান-নাক-গলা বিভাগের চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. প্রণবাশিষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “শিশুটির শ্বাসনালীতে কোথাও কিছু আটকে রয়েছে এটা আন্দাজ করেছিলাম। কিন্তু কোথায় আটকে রয়েছে তা বোঝা সম্ভব ছিল না। সম্যকভাবে তা জানার জন্যেই চেস্ট এক্স-রে করা হয়। সেখানেই দেখা যায় ব্লাউজের হুকটি আটকে রয়েছে শ্বাসনালীতে।”
ডা. প্রণবাশিষ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, শ্বাসনালীতে কিছু আটকে থাকা অত্যন্ত বিপজ্জনক। আকস্মিক ফুসফুসে অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। যাকে বলা হয় এস্পিক্সিয়া। শ্বাসনালী একেবারে বন্ধ হয়ে গেলে হৃদযন্ত্র ও মস্তিষ্ক অক্সিজেনের অভাবে কাজ বন্ধ করে দেয়। এতে অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে ওঠে। অস্ত্রোপচার টিমে ছিলেন ডা: নির্মাল্য সামন্ত, ডা: সুতীর্থ সাহা, ডা: সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। শিশুর অ্যানাস্থেসিস্ট হিসেবে কাজ করেছে ডা: ধীবশ সাহা। উল্লেখ্য, ভারতীয় বায়ুসেনার প্রথম বাঙালি এয়ারমার্শাল সুব্রত মুখোপাধ্যায় ১৯৬০ সালে জাপানের টোকিও শহরে এক নামী রেস্তরাঁয় বন্ধুর সঙ্গে ডিনার করতে গিয়ে গলায় খাবার আটকে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে মারা যান।
শিশুটির ক্ষেত্রে যাতে শ্বাস-প্রশ্বাসে কোনও অসুবিধা না হয় তার জন্য প্রথমে ট্র্যাকিওস্টমি করা হয়। এরপর এন্ডোস্কোপ করে ব্লাউজের হুকটি বের করা হয়। চিকিৎসকের কথায়, “এন্ডোস্কোপ ঢুকিয়ে ফরসেপ দিয়ে বের করা হুকটি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.