স্টাফ রিপোর্টার, বর্ধমান: কন্যাশ্রী প্রকল্পের ব্যাপ্তি বাড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের ছাত্রীরাও কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধা পাবেন৷ বৃহস্পতিবার বর্ধমানে প্রশাসনিক বৈঠকে এই ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ আর এই সুবিধা চালুতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখলেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা৷ তাঁদের নামও ইতিহাসের পাতায় ঢুকে গেল এদিন থেকে৷ ঠিক যেভাবে কলেজ স্ট্রিটে বিক্ষোভ-সমাবেশের বিরুদ্ধে একত্রিত হয়েছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা৷ তাঁদের দাবিকে গুরুত্ব দিয়ে কলেজ স্ট্রিটে যে কোনও রাজনৈতিক মিটিং-মিছিল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন৷
বৃহস্পতিবার বর্ধমানের সংস্কৃতি লোকমঞ্চে পূর্ব বর্ধমান জেলার প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ রাজ্যের মন্ত্রী থেকে আমলারা, কার্যত পুরো নবান্ন হাজির ছিল সেখানে৷ আর এই প্রশাসনিক বৈঠকে হাজির হয়েছিলেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের একঝাঁক পড়ুয়া৷ ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিমাইচন্দ্র সাহাও৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া খোন্দকার আমিরুল ইসলাম, প্রদীপ বাজপেয়ী, অভিষেক নন্দী, সায়নী রায়রা বিভিন্ন প্রস্তাব রাখেন মুখ্যমন্ত্রীর সামনে। তার মধ্যে সায়নী রায় মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন, “স্কুল বা কলেজ স্তরে ছাত্রীরা কন্যাশ্রীর সুবিধা পায়৷ রাষ্ট্রপুঞ্জ সেরার সম্মান দিয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী প্রমাণ করেছেন বাংলা আজ যা ভাবে বিশ্ব তা ভাবে আগামিকাল৷” সায়নী মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন রাখেন, ‘‘দিদি আমরা মেয়েরা অনেক প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় স্তর পর্যন্ত আসি৷ কন্যাশ্রী প্রকল্প বিশ্বের সেরা হয়েছে৷ আমাদের আবেদন বিশ্ববিদ্যালয় স্তরেও এই প্রকল্পের সুবিধা দেওয়া হোক৷” যা শুনে সঙ্গে সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, “ঠিক আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের জন্যও চালু করা হল কন্যাশ্রী৷ এবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা ‘কে-৩’ এর সুবিধা পাবে৷” বর্তমানে স্কুল স্তরে কন্যাশ্রী প্রকল্পে নবম শ্রেণি থেকে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত ছাত্রীরা এই প্রকল্পের সুযোগ পেয়ে থাকে। সরকারি ভাষায় যেটিকে ‘কে-২’ বলা হয়ে থাকে৷ আর বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে কন্যাশ্রী প্রকল্পকে সরকারি পরিভাষায় ‘কে-৩’ বলা হবে৷ তাও এদিন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছে রাজ্যের লক্ষ লক্ষ ছাত্রী। শিক্ষার আঙিনায় মেয়েদের আরও বেশি করে টেনে আনতে এই প্রকল্প চালু করা হয়৷
ওই প্রকল্পের সাফল্য বারবারই বিভিন্ন সভায় তুলে ধরেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গোটা দেশের মধ্যে রাজ্যের এই প্রকল্প যে আলাদা মাত্রা বহন করে, তা বারবার বলেছেন। শুধু দেশের গণ্ডির মধ্যেও সীমাবদ্ধ থাকেনি কন্যাশ্রীর সাফল্য। খোদ রাষ্ট্রসংঘের মঞ্চে সেরার শিরোপা ছিনিয়ে নেয় মুখ্যমন্ত্রীর এই স্বপ্নের প্রকল্প। তাঁর তাবড় বিরোধীদের মুখে কুলুপ এঁটে দেয় কন্যাশ্রীর এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। রাষ্ট্রসংঘের অনুষ্ঠানে কন্যাশ্রীর সাফল্যের কথা তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। যেভাবে গরিবদের সাহায্যে সরকার এগিয়ে এসেছে তা জানান গোটা বিশ্বকে। রাজ্যের মেয়েদের স্বনির্ভর করে তুলতে, নিজের পায়ে দাঁড়াতে যেভাবে কন্যাশ্রীর সাহায্য এগিয়ে দেওয়া হয়েছে, তা মুগ্ধ করে রাষ্ট্রসংঘের তাবড় কর্তাব্যক্তিদেরও। প্রায় ৬৩টি দেশের মধ্যে জনসেবার নিরিখে সেরা প্রকল্পের সম্মান পায় মুখ্যমন্ত্রীর এই স্বপ্নের প্রকল্প।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.