Advertisement
Advertisement

‘এমআরআই’ ছাড়া সব পরীক্ষা ও পরিষেবা এবার ফ্রি সরকারি হাসপাতালে

ক্লিক করে জেনে নিন কোন কোন ক্ষেত্রে এবং কীভাবে মিলবে এই পরিষেবা৷

Now dialysis, CT scan free in government hospitals PPP diagnostic centres
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:December 26, 2016 8:55 am
  • Updated:December 26, 2016 8:56 am  

গৌতম ব্রহ্ম: সরকারি হাসপাতালে ‘ফ্রি-পরিষেবা’-র পরিধি বাড়ল৷ এবার পিপিপি মডেলে চলা ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলিও নিখরচায় সিটি স্ক্যান, ডিজিটাল এক্স-রে করবে৷ ডায়ালিসিস করাতেও কোনও টাকা লাগবে না৷ বাস্তবিক ‘এমআরআই’ ছাড়া বাকি সব পরীক্ষা এবং পরিষেবাই ফ্রি হয়ে গেল সরকারি হাসপাতালে৷ পরীক্ষার পর সেন্টারগুলি রোগীকে ‘বিল’ দেবে৷ তাতে স্পষ্ট উল্লেখ থাকবে ‘নো পেমেন্ট রিকোয়ার্ড বাই পেশেন্ট পার্টি রেজিস্টার্ড উইথ দ্য গভর্নমেন্ট ফেসিলিটি৷ টু বি পেড বাই গভর্নমেন্ট৷’ দালাল ঠেকাতে এবং ধোঁয়াশা কাটাতে এমনই ব্যবস্থা করা হয়েছে৷

এতদিন সরকারি হাসপাতালের নিজস্ব পরীক্ষাকেন্দ্রগুলি থেকেই শুধুমাত্র বিনামূল্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো যেত৷ ভিড়ের চাপে অনেকেই পিপিপি মডেলে চলা ডায়াগনস্টিক সেণ্টার থেকে পরীক্ষা করাতে বাধ্য হতেন৷ এই সেণ্টারগুলি ১০-২০ শতাংশ রোগীকে বিনামূল্যে পরিষেবা দিত৷ বাকি ৮০-৯০ শতাংশ রোগীকে টাকা দিয়ে পরীক্ষা করাতে হত৷

Advertisement

অবশেষে পিপিপি মডেলেও ছিড়ল ফ্রি-র শিকে৷ রাজ্যের স্বাস্থ্য শিক্ষা-অধিকর্তা ডা. সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, হাসপাতালের নিজস্ব পরীক্ষাকেন্দ্রগুলি রোগীর চাপ সামলাতে পারছিল না৷ তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে পিপিপি মডেলে সরকারি হাসপাতালে ডায়গনস্টিক সেণ্টার চালু করা হয়৷ এখানে বাজারের থেকে অর্ধেকেরও কম দামে বিভিন্ন পরীক্ষা করানো হত৷ এবার সেই পয়সাটুকুও দিতে হবে না৷ ‘ডিমানিটাইজেশন’-এর সময়ে এর থেকে ভাল খবর আর কী হতে পারে?

সিদ্ধান্তের জেরে হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন কিডনির অসুখে ভোগা রোগী ও তাঁর পরিবার৷ এখন ডায়ালিসিস করাতে প্রথমে লাগে ১৯০০ টাকার মতো৷ ‘ওষুধ’ ও ‘কিট’-এর জন্য ১৪০০ টাকার মতো৷ ৫০০ টাকা ডায়ালিসিসি করানোর চার্জ৷ সিটি স্ক্যানের জন্য খরচ ৬০০-৩০০০ টাকা৷ ডিজিটাল এক্স-রে ১৫০ থেকে শুরু৷ ‘ডিসকাউণ্টেড রেট’-এ ডায়ালিসিস করিয়েও হাজার হাজার টাকা গুনতে হত তাঁদের৷ ঘটি-বাটি বেচতে হত৷ এবার ডায়ালিসিসের ‘কিটস’ থেকে ওষুধ, সবই দেবে হাসপাতাল৷ ‘কনস্ট্রাস্ট সিটি স্ক্যান’-এর ক্ষেত্রে যে ইঞ্জেকশন-ওষুধের দরকার তার জন্যও কোনও টাকা দিতে হবে না রোগী বা তাঁর পরিবারকে৷ তবে এই প্রকল্প এখন শুধু জেলাগুলিতে চলবে৷ পরে কলকাতার মেডিক্যাল কলেজগুলিতে সম্প্রসারিত করা হবে৷ এমনটাই জানালেন সুশান্তবাবু৷

গত ২৯ নভেম্বর রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের তরফে নির্দেশিকাটি জারি হয়৷ সেখানে মেডিক্যাল কলেজ ছাড়া রাজ্যের সমস্ত হাসপাতালকে পিপিপি মডেলে হওয়া ডিজিটাল এক্স-রে, ডায়ালিসিস ও সিটি স্ক্যান ‘ফ্রি’ করে দিতে বলা হয়৷ এই মর্মে সমস্ত হাসপাতালের সুপারকে সতর্ক করা হয়৷ ১ ডিসেম্বর থেকেই কার্যকর করা হয় সেই নির্দেশ৷ টালিগঞ্জের এম আর বাঙুর থেকে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ, সর্বত্রই মিলছে ‘ফ্রি’ পরিষেবা৷ বাঁকুড়ার অধ্যক্ষ ডা. পার্থপ্রতিম প্রধান জানান, “নির্দেশ মেনে বিনামূল্যে ডায়ালিসিস, সিটিস্ক্যান, ডিজিটাল এক্স-রে শুরু করেছি৷” একই বক্তব্য বাঙ্গুরের সুপার ডা. তাপস ঘোষের৷ জানা গিয়েছে, কেন্দ্রের জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের ‘ফ্রি ডায়গনস্টিক ইনিশিয়েটিভ’ প্রকল্পের হাত ধরেই বেড়েছে ফ্রি-পরিষেবার এই পরিধি৷ যে সব রোগীদের সিটি স্ক্যান, ডিজিটাল এক্সরে বা ডায়ালিসিসের প্রয়োজন হবে তাঁদের সুপার অফিস থেকে ‘ভাউচার’ দেওয়া হবে৷ তা দেখিয়ে পরীক্ষা করাতে হবে৷

এই সিদ্ধান্তে খুশি বেসরকারি অংশীদাররাও৷ পিজি, মেডিক্যাল, এনআরএস, সাগর দত্ত, এমআর বাঙ্গুর, শিলিগুড়ি স্টেট জেনারেল, রামপুরহাট স্টেট জেনারেল-সহ একাধিক সরকারি হাসপাতালে পিপিপি মডেলে ডায়গনস্টিক সেণ্টার চালায় ‘স্পন্দন’৷ সংস্থার তরফে সমীর কুণ্ডু জানিয়েছেন, “এই প্রকল্পটি সফল করতেও আমরা চেষ্টা করছি৷ রোগীদের সংখ্যাও বাড়ছে৷ টাকা-পয়সা নিয়ে আগেও সমস্যা হয়নি৷ আশা করছি, এখনও হবে না৷ ভাউচার জমা দিলেই সুপার অফিস চেক দিয়ে দেবে৷” স্বাস্থ্যকর্তাদের বক্তব্য, এই প্রকল্পের হাত ধরে এক ঢিলে দুই পাখি মরল৷ এক, সরকারি হাসপাতালে কার্যত সবটাই ‘ফ্রি’ হয়ে গেল৷ দুই, এই ‘ফ্রি’ পরিষেবার টানে কিছুটা হলেও কলকাতার মেডিক্যাল কলেজগুলিতে চাপ কমবে৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement