বাবুল হক, মালদহ: কাটমানির বিনিময়ে নিজেদের ঘনিষ্ঠ কর্মীদের দিয়ে কাজ করানো হয়েছে। তারই ফল মিলেছে হাতেনাতে। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করার ফলেই ভেঙে পড়েছে ফরাক্কার নির্মীয়মাণ সেতু। মঙ্গলবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে সরাসরি এই অভিযোগ তুললেন মালদহে তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী মৌসম বেনজির নুর। দাবি তোলেন, নির্মাণকারী সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করার। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল। ভেঙে পড়া সেতু নিয়ে আরও একটি গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। স্থানীয় সূ্ত্রে খবর, ভেঙে পড়ার চারদিন আগেই ফাটল দেখা গিয়েছিল গার্ডার বসানোর অংশে।
গত রবিবার সন্ধে নাগাদ গার্ডর বসানোর কাজ চলাকালীন হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে ফরাক্কা সেতুর নির্মীয়মাণ অংশ। ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে মৃত্যু হয় প্রজেক্ট ম্যানেজার ও ট্রেনি ইঞ্জিনিয়ারের। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পের এমন দশায় সমালোচনায় মুখর হয় রাজ্যের শাসকদল। আলাদাভাবে তদন্ত শুরু করে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ এবং জেলা পুলিশ। ঘটনার পরের দিনই কেন্দ্রের নির্দেশে ঘটনাস্থলে যান মালদহ উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। এই বিপর্যয়ে রাজনীতি না করার আহ্বান জানান তিনি।
তদন্তের স্বার্থে ফরাক্কার ভেঙে পড়া নির্মীয়মাণ সেতু পরিদর্শনে আজ ঘটনাস্থলে গেলেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। চিত্রাক্ষ সরকারের নেতৃত্বে সেখানে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করেন তাঁরা। সূত্রের খবর, বুধবার জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে ৯ জনের একটি দল পাঠানো হবে ফরাক্কার দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে। তাঁরা ফিরে গিয়ে রিপোর্ট দেবেন। সাইট ইনচার্জ দাবি করেছিলেন, সেতুর নকশাতেই গলদ ছিল। তা বারবার কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হলেও, কেউ তাতে কর্ণপাত করেননি বলে অভিযোগ তাঁর। এমনকী দিন কয়েক আগে সেতুর ওই নির্দিষ্ট অংশে ফাটল দেখা গিয়েছিল। তাও এড়িয়ে গিয়েছিলেন ইঞ্জিনিয়াররা। এসবের পর আজ ফরেনসিক দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিশেষজ্ঞরা কী বলেন, সেদিকে নজর থাকছে সকলের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.