সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: এ যেন অন্য নোটা!
পঞ্চায়েত ভোটে ‘নান অফ দ্য অ্যাবভ’ বা ‘নোটা’ না থেকেও যেন আছে। সাধারণত, পঞ্চায়েত ভোটে ‘নোটা’য় বোতাম টেপার সুযোগ মেলে না। কিন্তু অন্য ছবি এবার ভোটে।
তাহলে কীভাবে প্রয়োগ করা যাবে ‘নোটা’? পোলিং অফিসারের কাছে ব্যালট পেপার নিয়ে তার পার্ট ও সিরিয়াল নম্বর নথিভুক্ত হওয়ার পর কোনও ভোটারের যদি প্রার্থীতালিকা পছন্দ না হয়, তবে তিনি ভোটদানে বিরতও থাকতে পারেন। তবে সেই ব্যালট ভোট বাক্সে পড়বে না। তা ‘রিটার্ন ক্যানসেল’ হয়ে চলে যাবে আলাদা খামে। বুথের প্রিসাইডিং অফিসারের স্বাক্ষরের পর তা খামবন্দি হয়ে যাবে এবং সেই ব্যালটও পৌঁছবে রিসিভিং সেন্টারে। কিন্তু তা গণনা হবে না। তবে ‘রিটার্ন ক্যানসেল’-এর মাধ্যমে প্রার্থী না-পসন্দ হওয়ার বার্তা দিতে পারবেন ভোটাররা। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের এই নির্দেশ ভোটকর্মীদের প্রশিক্ষণে তা জেলায়-জেলায় জানিয়ে দিচ্ছে প্রশাসন।
ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ভোটকর্মীদের প্রশিক্ষন শুরু হয়েছে। সেখানেই ‘নোটা’ না থেকেও তার অন্যভাবে থাকার কথা বিস্তারিতভাবে ভোট কর্মীদের জানিয়ে দিচ্ছেন প্রশিক্ষণরত আধিকারিকরা। এই নোটার ব্যবহার চালু হয় ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচন থেকে। তারপর এই ‘নান অফ দ্য অ্যাবভ’ দেশের লোকসভা, বিধানসভা-সহ একাধিক ভোটেই অনেক ক্ষেত্রেই প্রার্থীদের জয়-পরাজয়ের নির্ণায়ক হয়ে উঠেছে। সারা দেশ জুড়ে এমন উদাহরণও রয়েছে একাধিক। পুরুলিয়া জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের আধিকারিক অরণ্য বন্দ্যেপাধ্যায় বলছেন, ‘পঞ্চায়েতে নোটা না থেকেও যেন কোথাও তার অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে। ব্যালট গ্রহণের পর ভোট দিতে না চাইলে তা নষ্ট না হলেও ফেরত দেওয়া যাবে। সেই ব্যালট ‘রিটার্ন ক্যানসেল’ হয়ে প্রিসাইডিং অফিসারের সইয়ের পর আলাদা খামে বন্দি হবে।’ আর কোন ব্যালট নষ্ট হলে তা অবশ্য স্বাভাবিক ভাবেই ‘স্পয়েল ব্যালট’ বলে চিহ্নিত হবে।
কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, সাধারণভাবে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে প্রিসাইডিং অফিসার ছাড়া চারজন পোলিং অফিসার-সহ মোট পাঁচ জন ভোটকর্মী থাকবেন। তবে যে সকল বুথে ভোটারের সংখ্যা ১২৫০ থেকে ১৪০০-র মধ্যে, সেখানে প্রিসাইডিং অফিসার-সহ মোট ছ’জন ভোটকর্মী দেওয়ার কথা জানিয়েছে কমিশন। পুলিশের সঙ্গে লাইনে থাকা ভোটারকে সামলাবেন ওই পাঁচ পোলিং অফিসার। তবে যে সব বুথে ভোটের সংখ্যা ১৪০০ হবে, সেখানে অক্সিলিয়ারি বুথের মাধ্যমে দু’ভাগে ভাগ করে নেওয়া হবে। বুথে-বুথে সুষ্ঠুভাবে ভোটদানের কাজ সম্পন্ন করতে রাজ্য জুড়ে ‘মক ড্রিল’-এর মাধ্যমে পঞ্চায়েত ভোটের আগেই একেবারে খাতায়-কলমে ভোট হবে আগামী ২১-২২ এপ্রিল। সেখানে সরকারি কর্মীদের রীতিমতো ভোটার সাজিয়ে জেলায়-জেলায় এই কর্মকাণ্ড চালাবে কমিশন। ত্রিস্তরীয় এই ভোটে ফার্স্ট, সেকেন্ড, থার্ড পোলিং অফিসাররা ক্রমান্বয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের ব্যালট দেবেন। ফোর্থ পোলিং অফিসারের কাজ হবে ভোটারের হাতে কালি দিয়ে তাঁকে চিহ্নিত করা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.