জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: গ্রামের আম বাগানে উনুনে কাঠের জাল দিয়ে বড় কড়াইতে রান্না করছেন কয়েকজন। তাঁদের সঙ্গে খুন্তি নাড়ছেন বিধায়ক৷ রান্না শেষে গ্রামের খেটে খাওয়া আদিবাসী মানুষদের বসিয়ে পরিবেশন করছেন তিনি৷ লকডাউন পরিস্থিতিতে দিনমজুর, খেতমজুর মানুষদের কাজকর্ম বন্ধ। রুজিরুটিতে পড়েছে টান। জুটছে না খাবার। ওইসব অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে গ্রামে গ্রামে রান্না করে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করছেন বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস।খাওয়া শেষে গরিব মানুষেরা বিধায়ককে মাথায় হাত দিয়ে আশীর্বাদ করে বাড়ি যান।
বনগাঁ উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত পিছিয়ে পড়া গ্রামগুলিতে রোজ ঘুরে বেড়াচ্ছেন বিশ্বজিৎ বাবু। দরিদ্র মানুষের অভাব অভিযোগের কথা শুনছেন। তাঁদের মধ্যে মাস্ক, স্যানিটাইজার বিলি করছেন। কিন্তু অসহায় মানুষেরা বিধায়কের কাছে খাবারের অভাবের কথাই বারবার জানিয়েছেন। তাই দরিদ্র মানুষের মুখে একবেলা অন্ন তুলে দিতে এগিয়ে এসেছেন তিনি। নিজের উদ্যোগে চাল, ডাল, আলু, তেল সংগ্রহ করে রান্না করিয়ে খাবার খাওয়াতে শুরু করেন আদিবাসী, সংখ্যালঘু, পারুই সম্প্রদায়ের মানুষকে। রবিবার থেকে রান্না করে খাওয়ানো শুরু করেছেন তিনি।
লকডাউন না ওঠা পর্যন্ত দুস্থদের খাওয়াবেন বলেই জানিয়েছেন বিধায়ক। গঙ্গানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অম্বিকাপুর গ্রামে তিনি খিচুড়ি ভোজনের আয়োজন করেছিলেন। প্রায় ৮০০ পরিবার এখানে এসে খাবার খান। সমাজিক দূরত্ব বজায় রেখে তাঁদের পাত পেড়ে খাওয়ালেন বিধায়ক। নিজেই হাতা, বালতি নিয়ে পরিবেশনও করেন।
জানিয়েছেন, ফের এই গ্রামে রান্না করা খাবারের ব্যবস্থা করা হবে। সোমবার আকাইপুর পঞ্চায়েত এলাকাতেও একইভাবে গরিব মানুষদের নিমন্ত্রণ করে খাবার খাওয়ান তিনি৷ বিশ্বজিৎবাবু বলেন, “এই দুঃসময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমার কর্তব্য। কাজকর্ম হারিয়ে অনেক মানুষ অনাহারে, অর্ধাহারে রয়েছেন। আমার বিধানসভা এলাকার প্রতিটি পঞ্চায়েত এলাকায় গরিব মানুষদের খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছি।” বিধায়কের কথা শুনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন দুস্থরা। তাঁদের বক্তব্য, “যদি সকলে এমন করতেন তাহলে আর খাবার অভাব হত না আমাদের।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.