নব্যেন্দু হাজরা: ‘৮১ জন বাচ্চার জন্য মাত্র ৭ কেজি চাল কেন?’, কেন্দ্রীয় পরিদর্শকদের প্রশ্নের মুখে পড়লেন উত্তর ২৪ পরগনার বনমালিপুর অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আধিকারিকরা। সোমবার এই বিদ্যালয়ে পৌঁছে পরিদর্শক দল স্কুলের প্রধান রান্নাঘর দেখতে চান। তাঁরা রান্নায় ব্যবহৃত মশলা-চাল-আলু সব খতিয়ে দেখেন। পরিদর্শকদের প্রশ্নের জবাবে রাঁধুনি বলেন, “বাচ্চারা ১০০ গ্রাম ভাতও খেতে পারে না। নষ্ট করে। তাই অল্প করে রান্না করা হয়।” চালের তুলনায় আলুর পরিমাণ বেশি থাকা নিয়ে রাঁধুনি জানান, পড়ুয়ারা আলু খেতে ভালবাসে।
এদিন জেলার বিভিন্ন স্কুল ঘুরে দেখে কেন্দ্রীয় পরিদর্শক দল। তার আগে দলটি বিকাশ ভবনে একটি বৈঠক করে। ৯ জনের দলটির নেতৃত্বে রয়েছেন উত্তরাখণ্ডের জিবি পন্থ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টিবিজ্ঞানের অধ্যাপিকা অনুরাধা দত্ত। পরিদর্শনে বেরনোর আগে তিনি জানান, “এটি রুটিন পরিদর্শন। দেশের প্রতিটি রাজ্যেই মিড ডে মিল পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে কেন্দ্রীয় দল। মিড ডে মিলের বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের যে ৩২টি সূচক আছে, সেগুলির ভিত্তিতেই সামগ্রিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হয়।” কেন্দ্রীয় দল আসার আগেই রাজ্য প্রশাসনের তরফে মিড ডে মিল রান্নায় নিযুক্ত ব্যক্তিদের নতুন অ্যাপ্রন, দস্তানা (গ্লাভস) দেওয়া হয়। এ বিষয়ে পরিদর্শক দলের প্রশ্ন, “সব দিন কি এগুলো পরে থাকেন?” উলটোদিক থেকে উত্তর আসে, “গ্লাভস পরলেও বাকিগুলো সবসময় পরা হয় না।”
কেন্দ্রীয় দলের পরিদর্শন নিয়ে তৃণমূল তোপ দাগে বিজেপির বিরুদ্ধ। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “রাজ্য সরকার যে প্রকল্পেই পুরষ্কৃত হচ্ছে, সেই প্রকল্পকেই ক্ষতি করতে নামছে কেন্দ্র। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো মিড ডে মিলে বাচ্চাদের মুখে মুরগির মাংস তুলে দিচ্ছেন। উলটোদিকে গোটা দেশে এই কাঠামো ভেঙে পড়েছে। উত্তরপ্রদেশে এতো শিশুমৃত্যু কেন! ভয়াবহ নানা কারণ জানতে পারছি। আমাদের রাজ্যে এসব হয় না।’’ উল্লেখ্য, গত দশ মাসে উত্তরপ্রদেশে ১১০টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। কেন্দ্রীয় দলের প্রসঙ্গ টেনে এদিন দিল্লিতে শিক্ষামন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. সুভাষ সরকার আবার বলেছেন, “অহেতুক এই পরিদর্শনের সঙ্গে রাজনৈতিক যোগ টানা হচ্ছে। যে দল গিয়েছে তারা নিরপেক্ষ।”
রাজনৈতিক চাপানোতরের মধ্যেই বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ, রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদাররা নানা কটাক্ষ করেছেন। দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘‘মিড ডে মিলের তদন্ত হলে ভয় কী! তদন্ত চলুক।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.