শুভঙ্কর বসু: গোটা কোচবিহারে যেদিন ভোট, সেদিন ভোট নেই মেখলিগঞ্জে। অথচ মেখলিগঞ্জ কোচবিহার জেলার বিধানসভা কেন্দ্র। আবার উত্তর ২৪ পরগনার লাগোয়া দুই কেন্দ্র বারাকপুর ও বারাসত। বারাকপুর কেন্দ্রের মানুষ যেদিন ভোট দেবেন, সেদিন ভোট নেই বারাসতে। রাজ্যে এমন ভুরি ভুরি উদাহরণ রয়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে এক গ্রামে যেদিন ভোট, পাশের গ্রামে সেদিন ভোট নেই।
এমন এলাকায় ‘সাইলেন্স পিরিয়ড’ বলবৎ করতে এবার রাজ্যের সমস্ত রাজনৈতিক দলকে এ ব্যাপারে বিশেষ সতর্ক হতে চিঠি পাঠিয়েছে কমিশন। নিষেধাজ্ঞা না মানলে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলের প্রার্থী পদ খারিজ হতে পারে বলে চিঠিতে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এব্যাপারে জেলাগুলিকেও বিশেষ নজরদারির নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।
জনপ্রতিনিধিত্ব আইন মোতাবেক যে কেন্দ্রে ভোট, সেই কেন্দ্রের অন্তর্গত সমস্ত এলাকায় ভোট গ্রহণের ৪৮ ঘণ্টা আগে সমস্ত ধরনের প্রচার বন্ধ রাখতে হয়। মিছিল, মিটিং, মাইক, টিভি, সংবাদপত্র থেকে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়া যেকোনও মাধ্যমে প্রচারে নিষেধাজ্ঞা। এই ৪৮ ঘণ্টাকেই কমিশনের ভাষায় বলে সাইলেন্স পিরিয়ড।
[ আরও পড়ুন: নির্বাচনী প্রচারে আক্রান্ত ভারতী ঘোষ, গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে কাঠগড়ায় তৃণমূল ]
সাত দফা নির্বাচন হওয়ায় রাজ্যের এমন অনেক এলাকাতেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যেখানে দু’টি এলাকার অবস্থান পাশাপাশি হলেও ভোট অন্যদিনে। মূলত সেসব জায়গায় প্রচারে সমস্ত রাজনৈতিক দলকে সতর্ক করে চিঠি পাঠিয়েছে কমিশন। চিঠিতে বলা হয়েছে, ভোট হবে এমন কেন্দ্রে সাইলেন্স জোন চলাকালীন তার পাশের কোনও কেন্দ্রে সভা-সমিতি করার ব্যাপারে বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে। ভোট রয়েছে সেই কেন্দ্র সম্পর্কিত কোনও বক্তব্য কোনওভাবেই প্রচারে ব্যবহার করা যাবে না। টিভি ও সোশ্যাল মিডিয়া প্রচারে বিরত থাকতে হবে। নিষেধাজ্ঞা না মানলে নেওয়া হবে কড়া ব্যবস্থা। এজন্য সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলের প্রার্থী পদ পর্যন্ত খারিজ হতে পারে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও সাইলেন্স পিরিয়ডে কোনও আঞ্চলিক বা বহুল প্রচারিত টিভি বা সংবাদ মাধ্যমে রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও স্টার প্রচারকরা সাক্ষাৎকার দিতে পারবেন না বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে পাশাপাশি এ ব্যাপারে জেলাগুলিকেও বিশেষ সতর্ক হতে বলেছে কমিশন। ভোট রয়েছে এমন কেন্দ্রের সীমান্তবর্তী বিধানসভা বা লাগোয়া এলাকাগুলিতে সাইলেন্স পিরিয়ডে সমস্ত ধরনের প্রচারে চালাতে বিশেষ নজরদারি চালাতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে সমস্ত রাজনৈতিক কর্মসূচি রেকর্ড করতে হবে। পাশাপাশি টিভি ও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারে জেলা মিডিয়া মনিটরিং কমিটিকেও রাখতে হবে ৪৮ ঘণ্টার বিশেষ নজরদারি। রাজ্যের সিইও অফিসের এক আধিকারিকের কথায়, “এবার সাইলেন্স পিরিয়ডে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার নিয়ন্ত্রণই এবার বড় চ্যালেঞ্জ। সাইলেন্স পিরিয়ডে ভোট রয়েছে এমন এলাকার খুব কাছাকাছি সভা সমিতির অনুমতি বিশেষ দেওয়া হয় না।”
শুধু এরাজ্যই নয় দফায় দফায় ভোট হওয়ায় গোটা দেশেই এমন পরিস্থিতি। সে কারণে এনিয়ে আগেই একটি বিশেষ কমিটি গড়েছিল কমিশন। এব্যাপারে আগেই সমস্ত রাজনৈতিক দলের মত নেওয়া হয়েছিল। এবিষয়ে ওই কমিটি কমিশনকে যে সুপারিশ করেছে, তার ভিত্তিতেই রাজনৈতিক দলগুলি ও জেলাগুলিকে বিশেষ সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।
[ আরও পড়ুন: ‘দেশে এমন চৌকিদারের দরকার নেই’, সরাসরি মোদিকে আক্রমণ অভিষেকের ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.