দেব গোস্বামী, বোলপুর: “আমাকে অপমান করা এত সহজ নয়। অপমান যতই থাকুক, সেটা গ্রাহ্য করা আমার উপরেই নির্ভর করে। শান্তিনিকেতনের সাত বছর বয়স থেকেই পড়াশোনা করে মানুষ হয়েছি। কে কী বললেন সেটা আমার কাছে খুব বড় কিছুই নয়।” বুধবার বিশ্বভারতীর পড়ুয়া ও অধ্যাপকদের সঙ্গে শান্তিনিকেতনের বাসভবন ‘প্রতীচী’তে বসে একথাই জানালেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।
অর্থনীতিবিদের সঙ্গে দেখা করে বিশ্বভারতীর সামগ্রিক পরিস্থিতি তুলে ধরলেন বিশ্বভারতীর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ও অধ্যাপকদের একাংশ। পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনা চলাকালানীন অমর্ত্য সেন বলেন, “শান্তিনিকেতনের পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। উদ্বেগ নিয়ে আমরা কী এগোতে পারি? বর্তমানে যে পথে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এগোতে চেষ্টা করছেন সেই পথ সহজ নয়। কেন কর্তৃপক্ষকে সকলে দোষারোপ করতে চেষ্টা করছেন। কেন তাঁদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ। দেশ-বিদেশের মানুষ বিভিন্ন ইস্যুতে সোচ্চার হচ্ছেন। বিশ্বভারতীর অবস্থা খারাপ হচ্ছে। আর কর্তৃপক্ষ সন্তুষ্ট হচ্ছেন তার কোন কারণ থাকতে পারে না। এখন এখানে আমরা সবাই রাজা, রাজার রাজত্বে। রাজনৈতিক হিংসা চরিতার্থ করার জন্যই বিশ্বভারতী নানা কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। সকলের আত্মচেতনা জাগ্রত করতে হবে। আমাদের আক্ষেপ করার কোন কারণ থাকতে পারে না।”
‘প্রতীচী’র জমিজটের মাঝেই ২৭ জুন শান্তিনিকেতনে আসেন অমর্ত্য সেন (Amartya Sen)। বিশ্বভারতীর উপাচার্যের রোষের মুখে পড়েন আগেই। হেনস্তার শিকার হয়েছেন বারবার। উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর সময়কালেই তাঁর একাধিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গিয়েছে পড়ুয়া-অধ্যাপক -অধ্যাপিকাদের। এমনকী সরব হন আশ্রমিক, প্রাক্তনী-সহ দেশ বিদেশের শিক্ষাবিদরাও। অমর্ত্য সেন কেন্দ্রের ইউনিফর্ম সিভিল কোর্ট আইন লাগু প্রসঙ্গে বলেন, “কঠিন জিনিসকে অপ্রতিষ্ঠিতভাবে সহজ করার প্রচেষ্টা মাত্র। আমাদের নিজেদের মধ্যেই নানা পার্থক্য থাকতে পারে। নিয়মকানুন মানা মূর্খের মতো আচরণ। ইউনিফর্ম নিয়ে আমরা হাজার বছর আছি। হিন্দুরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগই কেন্দ্রের আসল কথা। হিন্দু রাষ্ট্র ভারতবর্ষে শুধু এগিয়ে যেতে নয় হিন্দুধর্মকে ব্যবহার এবং অপব্যবহার করার চেষ্টা হচ্ছে। এর বিরুদ্ধেই সকলের চেতনা জাগ্রত করতে হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.