সৌরভ মাজি, বর্ধমান: “লিংক নেই। কোনও কাজ হবে না।” “মোদি ১২ হাজার টিকিট বিলি করতে বলেছে। বাকি কাজ করতে বারণ করেছে।” “রেজিস্ট্রি, স্পিড পোস্ট হবে না। যা বলার মোদিকে গিয়ে বলুন।” ডাকঘরে কোনও কাজে গেলেই এমন হাজারও বাহানা শুনতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের ডাকঘরে পরিষেবা কার্যত শিকেয় উঠেছে। সাধারণ চিঠি পাঠানো থেকে শুরু করে টাকা তোলা বা জমা দেওয়ার কাজও ঠিকভাবে হচ্ছে না বলে এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন। একই সঙ্গে ডাকঘরের কর্মীরা সেখানে কাজে আসা স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন বলেও অভিযোগ। কিছুদিন আগেই এই বিষয়ে ডাকবিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে নালিশ জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। ৫০ জনেরও বেশি বাসিন্দা সেই অভিযোগে সই করেছেন। অভিযোগের প্রতিলিপি দেওয়া হয়েছে বিডিও ও স্থানীয় বিধায়ককেও।
স্থানীয় বাসিন্দা সত্যনারায়ণ ঘোষ, জয়ন্ত পালিত, বুল্টি দে, আবদুল খালেকরা অভিযোগে জানিয়েছেন, গত দুই বছর ধরেই কার্যত কোনও পরিষেবা মিলছে না এই ডাকঘরে। দুর্ব্যবহার করা হয় তাঁদের সঙ্গে। এমনকী কোনও কাজে গেলে চূড়ান্ত হয়রানিও করা হয় বলে অভিযোগে জানিয়েছেন তাঁরা। বাসিন্দারা ওই অভিযোগেই লিখেছেন, কোনও কাজে গেলে কর্মীরা এমনও বলে, মোদী (প্রধানমন্ত্রী) ১২ হাজার চিঠি বিলি করতে বলেছে। বাকি সব কাজ করতে বারণ আছে। কিছু বলতে হলে মোদিকে গিয়ে বলুন। তাঁদেরও আরও অভিযোগ, আমানত ম্যাচিওর হওয়ার পর টাকা তুলতে গেলেও চূড়ান্ত হয়রানি করা হচ্ছে গ্রাহকদের। এমনকী সেখানকার কর্মীরা নাকি সাফ জানিয়ে দিচ্ছেন, বেশি কাজ করতে পারব না।
খণ্ডঘোষের বিধায়ক নবীনচন্দ্র বাগও স্বীকার করেছেন ওই ডাকঘরে পরিষেবা পেতে স্থানীয় বাসিন্দাদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। রবিবার ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “কিছুদিন আগেই বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন বিভিন্ন জায়গায়। খুবই খারাপ পরিষেবা ওই ডাকঘরে। বাসিন্দাদের খুবই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।” তবে ওই ডাকঘরের কর্মীরা কোনও মন্তব্য করতে চাননি। বর্ধমানের আধিকারিকদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হলে তাঁরা জানা, যা বলার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলবেন। যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানিয়েছেন, বিভিন্ন জায়গায় নালিশ জানানোর পর ১০ শতাংশ হলেও উন্নতি হয়েছে পরিষেবা। তবে হয়রানি পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। সেটাও কতদিন থাকে, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বাসিন্দারা। আগেও না কি এমন ঘটেছিল। কয়েকদিন ভাল পরিষেবা দিয়ে তারপর যে কে সেই হয়েছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.