নিজস্ব সংবাদদাতা, বনগাঁ: স্কুলে শিক্ষকের সংখ্যা মাত্র ২। পড়ুয়া প্রায় ১০০। ফলে পঠনপাঠন প্রায় হয় না বললেই চলে। মিড-ডে মিল খেয়েই বাড়ি ফেরে বেশিরভাগ ছাত্র-ছাত্রী। অভিযোগ এবিষয়ে ব্লক প্রশাসনিক আধিকারিদের জানিয়েও কাজ হয়নি। ফলে বাধ্য হয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে স্কুলে বিক্ষোভ দেখায় ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকেরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বনগাঁর আইটপাড়া-মাটিহারায় ২০০৫ সালে এম এস কে স্কুলটি শুরু হয়। পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত এই স্কুলটিতে পঠনপাঠন করতে আসত স্থানীয় নুড়িতলা, হুদা, মাটিহারা, আইটপাড়া-সহ বেশ কয়েকটি এলাকার পড়ুয়রা। প্রথম থেকে স্বাভাবিক ছন্দেই চলছিল স্কুলটি। তবে ২০১৬ সালে প্রথম কয়েকজন শিক্ষক স্কুল ছেড়ে চলে যান। এরপর থেকেই সমস্যা শুরু হয়। এরপর ২০১৮ সালে আরও বেশ কয়েকজন শিক্ষক অবসর নেন।
বর্তমানে স্কুলটিতে শিক্ষক মাত্র ২ জন। একজন বাংলার শিক্ষক, অপরজন ইংরেজির। ওই দুই শিক্ষকই স্কুলের সকল বিষয় পড়ান। অনেকক্ষেত্রেই আবার স্কুলের বিভিন্ন কাজের জন্য প্রায়ই স্কুলে আসতে পারেন না ১ জন শিক্ষক। কার্যত অথৈ জলে স্কুলের পড়াশোনা। জানা গিয়েছে, এই সমস্যার ফলে ইতিমধ্যেই অনেক পড়ুয়ারাই স্কুল ছেড়ে অন্য স্কুলে ভর্তি হয়েছেন। সাড়ে তিনশো পড়ুয়া থেকে কমে বর্তমানে পড়ুয়ার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে একশোতে। সেই সঙ্গে রয়েছে পানীয় জলের সমস্যাও। ফলে বিভিন্ন সমস্যার জেরে প্রায় বন্ধ হতে বসেছে লেখাপড়া। জানা গিয়েছে, অধিকাংশ দিনই মিড-ডে মিলের খাবার খেয়েই বাড়ি ফিরতে হয় পড়ুয়াদের। দীর্ঘদিন এভাবে চলতে থাকায় ঘটনার প্রতিবাদে সরব হন স্কুলের পড়ুয়া ও অভিভাবকেরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক মৃণালকান্তি দেবের ঘরের বাইরে বিক্ষোভ দেখান তারা। শিক্ষক চাই, পানীয় জল চাই এই দাবিতে স্লোগান দেন তারা।
অভিভাবকদের অভিযোগ, স্কুলের এই সমস্যাগুলি নিয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত ও বিডিওকেও জানিয়েছেন তাঁরা। তবে তাতে কার্যত কোনও ফল মেলেনি। তবে গোটা ঘটনার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক। দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ না হলে কি করে স্কুল চলবে তা নিয়ে চিন্তায় বর্তমান ২ শিক্ষক। কতদিনে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরবে পঠনপাঠনে সেই অপেক্ষায় পড়ুয়ারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.