বিপ্লবচন্দ্র দত্ত,কৃষ্ণনগর: যে কেন্দ্র থেকে জিতে বিধায়ক হয়েছিলেন নিহত সত্যজিৎ বিশ্বাস, নদিয়ার সেই কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রটিও হারাতে হল রাজ্যের শাসকদলকে৷ সহানুভূতির ভোটে নয়, বরং ক্ষুদ্র সংগঠন নিয়েই এখানে বাজিমাত করল বিজেপি৷ ত্রিশ হাজারেরও বেশি ভোটে কৃষ্ণগঞ্জ উপনির্বাচনে জিতলেন গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী আশিস কুমার বিশ্বাস৷
বিধানসভা উপনির্বাচনে বামেদের ভোট বিজেপির দিকে যাওয়ার ফলেই গেরুয়া শিবিরের পক্ষে কৃষ্ণগঞ্জ দখল করা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ৷ নিজের পরাজয় নিয়ে তৃণমূল প্রার্থী প্রমথরঞ্জন বসুর ব্যাখ্যা, ‘এটা স্পষ্ট যে সিপিএম ও কংগ্রেসের ভোট পেয়েই বিজেপি এই উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছে৷ তবুও আমাদের পরাজয়ের কারণ আমরা দলীয় স্তরে বিশ্লেষণ করব।’ কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে মোট ভোটারের সংখ্যা দু’লক্ষ বাষট্টি হাজার। তাঁদের মধ্যে মতুয়া সম্প্রদায়ের বহু ভোটার রয়েছেন। তাই এই বিধানসভা উপনির্বাচনেও একটা বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছিল মতুয়া ভোট। এবার অবশ্য উপনির্বাচনে ভোট দিয়েছিলেন দু’লক্ষ একুশ হাজার ভোটার।
২০১৬ সালে কৃষ্ণগঞ্জ থেকে ৪০ হাজারেরও বেশি ভোটে জিতেছিলেন তৃণমূলের সত্যজিৎ বিশ্বাস। গত ৯ ফেব্রুয়ারি সরস্বতী পুজোর আগের দিন রাতে দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হয়ে যান জেলায় দলের যুব সংগঠনের নেতা তথা তরুণ বিধায়ক সত্যজিৎ। এই খুনের পিছনে বিজেপিকেই দায়ী করেছিল তৃণমূল। সত্যজিতের খুনের পর কৃষ্ণগঞ্জে উপনির্বাচন পরিস্থিতি তৈরি হয়৷ নিহত বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস মতুয়া সম্প্রদায়ের কাছের মানুষ বলে পরিচিত ছিলেন। সেই মতুয়া ভোট ধরে রাখার লক্ষ্যে মতুয়া মহাসংঘের নদিয়া জেলা সভাপতি প্রমথরঞ্জন বসুকে উপনির্বাচনে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল।
রানাঘাট লোকসভার মতই কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনেও মতুয়া ভোট যে বিজেপির পক্ষে গিয়েছে, এমনটাই অভিমত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। সেই রায়কে সম্মান জানিয়ে বিজেপির প্রার্থী আশিস কুমার বিশ্বাস জানিয়েছেন, ‘মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ বিজেপিকে ভরসা করে আমাকে ভোট দিয়েছেন। এই বিধানসভা কেন্দ্রের এখনও অনেক কাজ বাকি। আমি বিধায়ক হিসাবে সেই সব কাজ শেষ করব। সেই সঙ্গে মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের উন্নয়ন করার চেষ্টা করব৷’ বনগাঁ লোকসভা এবং কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা – দুটোতেই তৃণমূলের হারে স্পষ্ট ইঙ্গিত, মমতা থেকে ভরসা হারাচ্ছে মতুয়া সম্প্রদায়৷
ছবি: সুজিত মণ্ডল৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.