ফাইল চিত্র
চন্দ্রজিৎ মজুমদার, কান্দি: দেখতে দেখতে পৌষ মাস শেষ। এখন চলছে গ্রামগঞ্জের পিঠেপুলি তৈরির আয়োজন। প্লাস্টিক ও থার্মোকলের তৈরি সামগ্রী বিক্রি শুরু হওয়ায় বিক্রি কমেছে পিঠেপুলি তৈরির সরঞ্জাম বিক্রিতেও। এর ফলে মাটির পিঠেপুলি সরঞ্জাম তৈরির কারিগর আর্থিকভাবে ধুঁকছেন।
কান্দি, খড়গ্রাম, বড়ঞা সকল ব্লক এলাকার কুমোর পরিবারগুলি ধুঁকছে। সকলের আবেদন, বিষয়টিতে রাজ্য সরকার নজর দিলে ভালো হয়। কান্দি থানা এলাকার দোহালিয়া পালপাড়ার বাসিন্দাদের বক্তব্য, “অন্যান্য বছর পিঠেপুলি তৈরির জন্য মাটির তৈরি সড়া, খালা, সবি বিক্রি হলেও এবছর ক্রেতাদের দেখা নেই। সারা দিনে অন্যান্য বছর যেখানে পিঠে তৈরি সরঞ্জাম যোগান দেওয়া কষ্টকর হত, এবছর বিক্রি নেই। এর ফলে আমাদের সংসার চালানো খুবই সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।” কান্দির দোহালিয়া গ্রামের আর এক কারিগর স্বপন পাল জানিয়েছেন, “পিঠে তৈরির সরঞ্জাম বিগত বছরগুলি যেখানে ৫০ থেকে ১০০ টাকা দামে বিক্রি করা হয়েছিল, সেখানে এ বছর সেট প্রতি ৩০ টাকা থেকে ৫০ টাকা দাম রেখেও ক্রেতা মিলছে না। ফলে এই মাটির শিল্প বন্ধ হওয়ার মুখে।”
অপর দিকে বিষয়টি নিয়ে কান্দি পঞ্চায়েত সমিতির সহকারি সভাপতি পার্থপ্রতিম সরকার বলেন, “প্লাস্টিক ও থার্মোকলের থালা, বাটি বিক্রি হওয়ায় মাটির পিঠা তৈরির সরঞ্জাম বিক্রি প্রায় হচ্ছে না বলতে গেলেই হয়। পাশাপাশি প্লাস্টিক জিনিসপত্র বাজার ছেয়ে গিয়েছে। ফলে মাটির জিনিসের দাম কমে যাচ্ছে। কদর কমে যাচ্ছে। আমরা ওই মৃৎশিল্পীদের সহযোগিতা করব।” যদিও বিষয়টি নিয়ে কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকার বলেন, “আমি পুরো বিষয়টি নিয়ে কলকাতায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব। ওদের পাশে থেকে সাহায্য করতে পারলে আমি খুশি হব।” বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে, মাটির জিনিসের দাম এখন আর কেউ দেয় না। এই মৃৎশিল্প যাতে বেঁচে থাকে, তার জন্য নানা মেলা অনুষ্ঠান করা হয়। সরকারও বহু চেষ্টা করে। বিভিন্ন সময় ব্যবসা বাঁচানোর জন্য সাহায্য করা হয়। জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদ জেলার মধ্যে কান্দি মহকুমায় মৃৎশিল্পী বেশি। সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.