স্টাফ রিপোর্টার: খুচরো বাজারে আলুর দাম কমানোর পাশাপাশি রং মেশানো বন্ধে নজরদারি জোরদার করার নির্দেশ দিল রাজ্য সরকার৷ কারণ, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন কোনওভাবেই নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি হতে দেওয়া যাবে না৷ বিশেষ করে জ্যোতি আলুর দাম কিলো পিছু ১৬-১৭ টাকা এবং চন্দ্রমুখী ১৮-২০ টাকায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যে ফড়ে ও মজুতদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে কৃষি বিপণন দফতর৷
উল্লেখ্য, বর্তমানে বাজারে জ্যোতি আলু ২২-২৩ টাকা এবং চন্দ্রমুখি ২৪-২৫ টাকা কিলো দরে বিক্রি করছেন খুচরো ব্যবসায়ীরা৷ অথচ এ বছর প্রায় ৯০ লক্ষ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হয়েছে রাজ্যে৷ কৃষি বিপণন মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত শুক্রবার দাবি করেছেন, “প্রতি মাসে ৫ লক্ষ মেট্রিক টন আলু লাগে রাজ্যবাসীর৷ সেই হিসাবে এবার অতিরিক্ত ৩০ লক্ষ মেট্রিক টন আলু উৎপাদিত হয়েছে৷ একশ্রেণীর ফড়ে ও দালালদের জন্যই বাজারে আলুর দাম বাড়ছে৷ অবিলম্বে ‘ফড়েরাজ’ বন্ধ করে আলুর দাম কমানোর জন্য হিমঘর ও আলু ব্যবসায়ীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷” দাম কমাতে প্রয়োজনে পুলিশ ও কৃষি-বিপণন দফতর যৌথভাবে বাজারে অভিযান চালাবে বলেও এদিন ইঙ্গিত দেন মন্ত্রী৷
আলুর গায়ে ইটের গুঁড়ো থেকে শুরু করে নানা ধরনের রাসায়নিক মেশানের ‘ব্যবসায়িক রীতি’ বহুদিনের৷ আলুতে রং মেশানো বন্ধে বহুদিন আগেই সরকারিভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল৷ কিন্তু মাঝে বন্ধ হলেও ফের নির্বাচনে প্রশাসন ব্যস্ত হয়ে পড়ায় এক শ্রেণীর আলু ব্যবসায়ীরা রং মেশাতে শুরু করেছে৷ শুক্রবার খাদ্যভবনে রাজ্যের হিমঘর মালিক ও আলু ব্যবসায়ীদের সংগঠনের সঙ্গে দফতরের অফিসারদের নিয়ে বৈঠক করেন কৃষি বিপণন মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত৷ বৈঠক শেষে মন্ত্রী জানান, “আলুতে মেশানো রং-এর জেরে পেটের নানা অসুখ থেকে শুরু করে ক্যানসার পর্যন্ত হচ্ছে৷ তাই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে যদি কেউ এমন হীন কাজ করেন তবে তিনি ‘সোশ্যাল ক্রাইম’ করবেন৷ স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী নিজে রাজ্যবাসীর স্বাস্থ্যের কথা ভেবে বিষয়টি বন্ধের জন্য আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন৷ বস্তুত এই কারণে কয়েকদিন পর থেকে রং আছে এমন আলু বাজারে বিক্রি বন্ধের জন্য চেষ্টা করা হবে৷” মন্ত্রী তপনবাবু জানিয়েছেন, আলুর বাজার দর নিয়ন্ত্রণে দফতরের অফিসার ও কর্মীদের পাশাপাশি তিনি নিজেও বিভিন্ন এলাকায় যাবেন৷ মুখ্যমন্ত্রীর সবুজ সংকেত পেলেই আলুর মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে আগামী সপ্তাহেই ফড়ে ও মজুতদারদের বিরুদ্ধেও স্বয়ং মন্ত্রী নিজেও অভিযানে অংশ নিতে পারেন৷
দীর্ঘদিন ধরেই কিছু অসাধু ব্যবসায়ী খাদ্যদ্রব্যে রং ও ভেজাল মেশানোর কাজ চালাচ্ছেন৷ তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে রাজ্য সরকারের কৃষি ও বিপণন দফতরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ বাজার ঘুরে ও বিভিন্ন গুদামজাত পণ্য সরেজমিনে খতিয়ে দেখে প্রয়োজনে কঠোরতম ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য প্রশাসন৷ বিশেষ করে বিভিন্ন বাজারে দল গিয়ে দেখবে কোথাও কোনও রং মেশানো হচ্ছে কি না৷ পাশাপাশি, চলবে ফড়ে ও মজুতদারদের বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযান৷ বাজারে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটালে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত প্রশাসনের কর্তারা৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.