বিক্রম রায়, কোচবিহার: যে কোনও উৎসবের আগেই সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে থাকেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ গত কয়েকবছর ধরে তাঁর এই ভূমিকা রাজ্যবাসীর কাছে বেশ পরিচিত হয়ে উঠেছে৷ কী দুর্গাপুজো, ইদ, খ্রিস্টমাস কিংবা বুদ্ধ বা মহাবীর জয়ন্তী–বিভিন্ন সম্প্রদায়ের উৎসবের আগেই শুভেচ্ছা জানান মুখ্যমন্ত্রী৷ এবার তাঁর দেখানো পথেই হাঁটল কোচবিহার জেলা পুলিশ৷ ইদের আগে সোশ্যাল মিডিয়ার একটি পোস্টে একেবার কোরানের কথা উল্লেখ করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার আবেদন জানিয়েছে তাঁরা৷
সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া পোস্টে কোচবিহার জেলা পুলিশের তরফে লেখা হয়েছে, ‘ইদ-উল-আজহায় কুরবানি দেওয়ার উদ্দেশ্য আল্লাকে রাজি করানো, কারও মনে দুঃখ না দেওয়া৷’ এরপর কার্যত আবেদন করেই লেখা হয়েছে, ‘কুরবানি দেওয়া গোস্ত প্রকাশ্যে আনবেন না, বা পশুকে কুরবানি দেওয়ার কোনও প্রকার ছবি সোশ্যাল সাইটে পোস্ট করবেন না৷ ইসলাম শান্তি ও ভালবাসার আরেক নাম৷’ আগামী সোমবার দেশজুড়ে পালিত হবে ইদ৷ তার আগে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে জেলা পুলিশের এই উদ্যোগ ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে নেটদুনিয়ায়৷ তা প্রশংসাও কুড়িয়েছে৷ এনিয়ে কোচবিহারের পুলিশ সুপার সন্তোষ নিম্বালকারের বক্তব্য, ‘শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রেখে যাতে ইদ পালিত হয়, তাই আমাদের এই উদ্যোগ৷ আমরা মানুষের কাছে এই বার্তা নিয়ে পৌঁছাতে পেরেছি৷ আমাদের আশা, এবার অশান্তি রুখবে৷ শান্তিতেই উৎসব পালিত হবে৷’
কোচবিহার পুলিশের এই উদ্যোগ মনে করিয়ে দিচ্ছে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের এক সদস্যের বার্তা৷ মৌলানা কেআর ফিরাঙ্গি মাহালি নামে ওই সদস্যের বক্তব্য ছিল, “আমি জানি প্রতি বছরের মতো এবারও মহা ধুমধামে ইদ-আল-আজহা পালন করবেন এদেশের মুসলিমরা। কিন্তু, তাঁদের কাছে আমি আবেদন করব, সরকার নিষিদ্ধ করেছে এই রকম কোনও পশু বলি দেবেন না। একমাত্র সেই পশুগুলিকেই বলি দিন যাদের উপর কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। আর প্রকাশ্যে বলি না দিয়ে কোনও মাদ্রাসা বা নিজের বাড়িতে দিন। আপনার ধর্মাচরণের পদ্ধতিতে যেন অন্য ধর্মের কেউ আঘাত না পান, সেদিকেও লক্ষ্য রাখবেন। পাশাপাশি পশু বলিদানের ছবি তুলে তা সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্টও করবেন না।” কোচবিহার পুলিশের মতো এই উদ্যোগ নিক অন্যান্য জেলাও, এমনই চাইছে প্রশাসন৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.