অরূপ বসাক ও শান্তনু কর : পরিবেশ বাঁচানোর অন্যতম উপাদান অরণ্য সংরক্ষণ। উত্তরবঙ্গের সুন্দরী তিস্তা আশপাশের পরিবেশ বজায় রাখতে এবছর পিকনিকে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল জেলা প্রশাসন। তাই নতুন বছরের প্রথম দিনটা নির্মল আনন্দে কাটাল পর্যটকরা। ভালো থাকল পরিযায়ী পাখিরাও। আনন্দে মাতলেন পর্যটকরাও। বিকল্প পিকনিক স্পট হিসেবে বেছে দেওয়া হয়েছিল গজলডোবা তিস্তা ব্যারেজে সংলগ্ন এলাকা গজলডোবার অদূরে টুকরো বনাঞ্চলেই জমে উঠল বনভোজন।
একটু অন্যভাবে যারা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে চায়, তাদের জন্য নতুন সিদ্ধান্ত পোয়াবারো। পূর্ব মেদিনীপুর থেকে সপরিবারে গজলডোবা বেড়াতে গিয়েছিলেন অশোক দলুই। ভোরের আলোয় নির্জন জঙ্গল আর পরিযায়ী পাখিদের দেখে ভীষণ খুশি অশোক বাবু। এবার গজলডোবার পাখিবিতান অভয়ারণ্যে পক্ষীপ্রেমী এবং পর্যটকদের মন কেড়ে নিয়েছে বিরল প্রজাতির হাঁস রাঙামুড়ি। টকটকে লাল ঠোঁট, কমলা মাথা। রূপের ছটায় নজর কাড়ছে সকলের। মূলত দক্ষিণ ইউরোপ এবং মধ্য এশিয়ার বাসিন্দা রাঙামুড়ি। তবে শীত পড়লেই এরা উড়ে যায় বিভিন্ন দেশে।যার মধ্যে এই বছর এই হাঁসের ঠিকানা গজলডোবার পাখি বিতান। বছরের প্রথম দিন নিজের ক্যামেরায় তোলা রাঙামুড়ি হাসের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করে হইচই ফেলে দিয়েছেন শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি অচিন্ত্য গুপ্ত। ছবিই আরও উৎসাহ বাড়িয়েছে পক্ষীপ্রেমী এবং পর্যটকদের। বৈকুণ্ঠপুর বনবিভাগের সহকারী বনাধিকারিক রাহুল দেব মুখোপাধ্যায় জানান, রাঙামুড়ির সংখ্যা শতাধিক। ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে জলাশয়ে।
বছরের এসব দিনগুলোয় তিস্তার চরে ভিড় জমান পর্যটকরা। তবে শুধু জঙ্গলের শোভা দেখার জন্য নয়। রীতিমত দলবল নিয়ে চড়ুইভাতিতে মেতে ওঠেন সকলে। উচ্চস্বরে চলে সাউন্ড সিস্টেম। চাপা পড়ে যায় জঙ্গলের স্বাভাবিক আবহ। সেসব বজায় রাখতে এবছর ওই এলাকায় অতিরিক্ত জমায়েতে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে প্রশাসন। এই উদ্যোগে উৎসবপ্রেমীদের মুখ একটু ব্যাজার হলেও, খুশি পরিবেশপ্রেমীরা। পরিবেশ সংস্থা ন্যাফের কোঅর্ডিনেটর অনিমেষ বসুর কথায়, প্রশাসনের এই উদ্যোগে সাধারণ মানুষের সামিল হওয়ার বিষয়টি যথেষ্ট আশাব্যঞ্জক। এভাবে সকলে এগিয়ে আসলে, পরিবেশ ফের সুন্দর হয়ে উঠবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.