নন্দন দত্ত, সিউড়ি: রাজ্যে এনআরসি হচ্ছেই না। সিএএ-তে একজনের নাম বাদ যাবে না। নাগরিকত্ব যাবে না। বরং আরও কিছু মানুষের নতুন করে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। যাঁরা মিথ্যা বলে ভ্রান্ত ও ভুল প্রচার করছেন, তারা মানুষের মধ্য ভ্রান্ত ধারণা তৈরি করতে চাইছেন। বৃহস্পতিবার তারাপীঠে পুজো দিয়ে দাবি করলনে বিজেপি নেতা মুকুল রায়।
তিনি বলেন, ‘যারা অপপ্রচার করছেন, তারা ভুল করছেন। স্বাভাবিকভাবেই এটা বলার কোনও প্রশ্ন নেই। এটা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন। সুপ্রিম কোর্ট এই রায়ে মান্যতা দিয়েছে। এবং দেশের সর্বোচ্চ আদালত কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি। এনআরসি হবে এমন কথা অমিত শাহ কোথাও বলছেন না। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় এনআরসি নিয়ে কখনও কোনও আলোচনা হয়নি। যা হয়েছে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে। তাতে একজন ভারতবাসীর নাগরিকত্ব যাবে না। বরং আরও কিছু মানুষ যারা পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তানের সংখ্যালঘুরা অত্যাচারিত হয়ে এদেশে আসবেন তাদের সকলকে এ দেশের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।’
প্রসঙ্গত, লাভপুরের খুনের ঘটনায় বিজেপি নেতা মুকুল রায়কে এদিন টানা পাঁচ ঘন্টার বেশি জেরা করল পুলিশ। যার পরিপ্রেক্ষিতে জেরা শেষে মুকুল রায় বললেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে নেতা থেকে কর্মীদের এভাবেই হেনস্তা করছে বাংলার পুলিশ।’ তাঁর দাবি, মানুষ এর জবাব দেবে। লাভপুরের তৃণমূলের বিধায়ক বর্তমানে বিজেপির নেতা মনিরুল ইসলামের বাড়িতে খুনের ঘটনায় নাম জড়ায় মুকুল রায়ের। সেই ঘটনায় কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে মুকুল রায়কে গ্রেপ্তার করা না গেলেও জিজ্ঞাসাবাদ করা যাবে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার দুপুর ২টো থেকে সিউড়ি থানায় জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয় মুকুল রায়ের। ডিএসপি উদয় বন্দ্যোপাধ্যায়, সিটের তদন্তকারী অফিসার স্বর্গজিৎ বসু ও লাভপুরের ওসি পার্থসারথী মুখোপাধ্যায় টানা জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। দুপুর ২টো থেকে সন্ধ্যা ৮টা পর্যন্ত টানা জেরাপর্ব চলে।
জেরা শেষে মুকুল রায় বলেন, ‘মহামান্য কলকাতা হাই কোর্ট এই মামলায় রায় দিয়েছেন তদন্তে সাহায্য করার জন্য। আমি তাই যখন ডাক পাব তদন্তে সাহায্য করতে আসব। এর আগেও এভাবেই বামফ্রন্ট সরকারের আমলে হেনস্তা করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমানের মমতার সরকার তাকে ছাপিয়ে গিয়েছে। রাজনৈতিক মোকাবিলা করতে না পেরে মিথ্যা মামলা সাজিয়ে হেনস্তা করা হচ্ছে। সে মামলা দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে আছে, অর্জুন সিংয়ের বিরুদ্ধেও আছে। জেলবন্দি আছে বহু নিরপরাধ বিজেপি কর্মী। জেলা সভাপতিদের বিরুদ্ধে মামলা আছে। দীর্ঘ জেরার নামে হেনস্তার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’
তবে তাঁকে আটকে রাখলেও পুলিশের বিরুদ্ধে মুকুল রায় কোনও অভিযোগ করেননি। তাঁর দাবি, পুলিশকে যেমন নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তেমনই তারা কাজ করেছেন। তাঁর দাবি, পুলিশ যা যা জিজ্ঞাসা করেছে, তার যথাযথ উত্তর দিয়েছেন। উল্লেখ্য, চলতি বছরের প্রথম দিনেই দুবরাজপুরে একইভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় মুকুল রায়কে। এদিনের দীর্ঘ জেরায় খুব মামুলি প্রশ্ন করা হয়েছে বলে কটাক্ষ করেন মুকুল রায়। যাতে তিনি বলেন, সত্য উদঘাটনের থেকে তাকে হেনস্তা করা মূল উদ্দেশ্য ছিল রাজ্য সরকারের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.