ধীমান রায়: কাটোয়ার গঙ্গা নদীর অদূরেই দাঁইহাটের সিদ্ধেশ্বরী মাতার মন্দির৷ সিদ্ধেশ্বরী মাতার পুজোয় কিন্তু ব্রাত্য গঙ্গাজল৷ তার পরিবর্তে কারণবারি দিয়েই সিদ্ধেশ্বরী অর্থাৎ দক্ষিণাকালীর পুজো হয়ে আসছে৷ এটাই ৩৫০ বছরের রীতি।
চারদিনের এই কালীপুজো ঘিরে মেতে থাকেন এলাকাবাসী৷ সিদ্ধেশ্বরী মাতার মাহাত্ম্যের কথা দূরদূরান্তের গ্রামেও প্রচারিত৷ আর তারই আকর্ষণে দূরদূরান্তের ভক্তরাও ভিড় জমান দাঁইহাটের বেড়া এলাকায় প্রাচীন এই সিদ্ধেশ্বরী মাতার পুজোয়৷ স্থানীয়রা জানান, রামানন্দ নামে এক সাধক এই দক্ষিণাকালীর প্রতিষ্ঠা করেন৷ ওই সাধকের বাড়ি ছিল নদিয়া জেলার মাটিয়ারিতে৷ গঙ্গা নদীর ওপারে মাটিয়ারি অবস্থিত৷
রামানন্দ সাধনার জন্য নিরিবিলি জায়গা হিসাবে বেড়া গ্রামকেই তখন বেছে নিয়েছিলেন৷ রোজ গঙ্গা পার হয়ে তিনি সাধনা করতে আসতেন বেড়া গ্রামে৷ প্রতিষ্ঠা করেন পঞ্চমুণ্ডির আসন৷ দেবীকে ওই আসনে প্রতিষ্ঠিত করে সাধনায় মগ্ন হয়ে থাকতেন রামানন্দ৷ পরবর্তীকালে বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার এই পুজো চালিয়ে আসছেন৷
কার্তিকী অমাবস্যায় পুজো হয় সিদ্ধেশ্বরী মাতার৷ তৃতীয়ার দিন বিসর্জন হয়৷ নিয়ম আছে, সিদ্ধেশ্বরীদেবীর পুজোয় জলের পরিবর্তে কারণবারি ব্যবহৃত হয়৷ দেবীকে ইলিশ, মাগুর ও পোনা এই তিন মাছের পদ রান্না করে ভোগ দিতে হয়৷ ন’পোয়া চাল ভাজা দিতে হয়৷ তবে সিদ্ধেশ্বরী মাতার পুজোয় ঘট বিসর্জন হয়, প্রতিমা নয়।৷ স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তাঁদের কাছে সিদ্ধেশ্বরী মাতা বড় জাগ্রতা দেবী৷ অনেকেই মানত করেন এখানে৷ মনোবাসনা পূর্ণ হলে পরের বছর পুজো দেন৷ পারিবারিক পুজো নামেই৷ আসলে সবার পরশে সমৃদ্ধ সিদ্ধেশ্বরী মাতার মন্দির৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.