ছবি: প্রতীকী
শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: পুজোর ছুটিতে ছুটি নয়৷ ক্লাসে আসতে হবে সবাইকে৷ পড়ুয়া থেকে শুরু করে সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকারাও আসবেন। এমনই ফতোয়া জারি করা হয়েছে দাসপুরের চাঁইপাট হাইস্কুলে৷ পুজোর ছুটি হইহই করে কাটাতে যখন রাজ্যের স্কুল পড়ুয়ারা ব্যস্ত, তখন দাসপুরের চাঁইপাট হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ রীতিমতো বিজ্ঞপ্তি জারি করে পুজোর ছুটিতে স্কুল খুলে রেখেছেন৷ উদ্দেশ্য, পড়ুয়াদের পঠনপাঠনে ব্যস্ত রেখে পরীক্ষার উপযোগী করে তোলা৷ কারণ, পুজোর ছুটি শেষ হলেই পরীক্ষা শুরু৷
স্কুলের প্রধান শিক্ষক অরুণ কুমার পাল বলেন, “ পুজোর ছুটি শেষ হলেই দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির টেস্ট পরীক্ষা৷ তারপরই অন্যান্য ক্লাসের বাৎসরিক পরীক্ষা৷ আমরা দেখেছি পুজোর ছুটিতে বেশির ভাগ ছাত্রছাত্রী ছুটির মজা নিতে ব্যস্ত থাকে৷ ফলে পরীক্ষার জন্য কোনও প্রস্তুতিই থাকে না৷ তাই আমরা ঠিক করেছি দুর্গাপুজোর চারদিন লক্ষ্মী পুজোর এক দিন ও কালী পুজোর পাঁচদিন ছুটি বাদ দিয়ে বাকি দিনগুলি আমরা স্কুল খুলে রাখব৷ সবাইকে স্কুলে আসতে হবে৷ সেইমতো স্কুলে ক্লাস শুরু হয়েছে৷”
ষষ্ঠীর দিন থেকে স্কুলগুলিতে পুজোর ছুটি শুরু হয়েছে। সরকারিভাবে খোলার কথা আগামী ১২ নভেম্বর। এই লম্বা ছুটির পরই স্কুলগুলিতে দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির টেস্ট পরীক্ষা শুরু ১৫ নভেম্বর থেকে৷ দেখা গিয়েছে, ছুটির পেলেই আনন্দে দিন কাটিয়ে দেয় স্কুল পড়ুয়ারা৷ ভুলেই যায় পরীক্ষার রুটিন৷ ফলে পঠনপাঠনে ব্যাপক প্রভাব পড়ে বলে প্রবীণ শিক্ষকদের অভিমত৷ শুধু তাই নয়, তারপরই শুরু হয়ে যায় বাৎসরিক পরীক্ষা৷ অন্যান্য বছরের অভিজ্ঞতা উপলব্ধি করে চাঁইপাট হাই স্কুল কর্তৃপক্ষ পুজোর ছুটির আগে এমনই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিলেন৷ পরিচালন কমিটি সিদ্ধান্তেই বিষয়টি ঘটেছে৷ বলা বাহুল্য, বরাবরই পড়ুয়াদের পঠনপাঠনে বিশেষ জোর দিয়ে থাকেন চাঁইপাট হাই স্কুল কর্তৃপক্ষ৷
স্কুলের তরফে জানা গিয়েছে, চলতি বছরে সরকারি নির্দেশিকা মেনে গরমের ছুটির সময় টানা ১২ দিন স্কুল বন্ধ রাখতে হয়েছিল৷ তারও বেশ প্রভাব পড়েছিল পঠনপাঠনে৷ সেই ছুটির পড়া পুষিয়ে দিতে গত জুলাই মাস থেকে প্রতি রবিবার দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস নেওয়া হয়েছে। শিক্ষকরা অত্যন্ত তৎপরতার সঙ্গে সেই ক্লাস নিয়েছেন। বলা যায়, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় যা নজিরবিহীন। প্রধান শিক্ষক অরুণবাবু আরও বলেন, “ আমরা বরাবরই পড়ুয়াদের স্বার্থের বিষয়টি বিবেচনা করি৷ সেখানে শিক্ষক শিক্ষিকাদের স্বার্থকে বড় করে দেখা হয় না৷ অনেক শিক্ষক দূর থেকে এসেও অতিরিক্ত ক্লাস করিয়ে যান৷ পরিচালন কমিটির পূর্ণ সমর্থনও আমরা পেয়েছি৷ গরমের ছুটির পড়া আমরা প্রতি রবিবার ক্লাসের মধ্যে দিয়ে সম্পূর্ণ করে দিয়েছি৷ পুজোর ছুটির পরই যেহেতু পরীক্ষা। তাই আমরা সামান্য ক’টা দিন ছুটি দিয়ে বাকি দিনগুলি সবাইকে স্কুলে আসতে বলেছি৷ আসছেও সবাই৷”
কী বলছেন শিক্ষকরা? স্কুলের শিক্ষক পুলক মাইতি বলেন, “সবাই তো চায় ছুটির মজা নিতে৷ কিন্তু আমরা শিক্ষকতার পেশার সঙ্গে যুক্ত, তাই ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে অতিরিক্ত ক্লাস করছি৷ এটুকু ত্যাগ স্বীকার তো করতেই হবে৷” তাই পড়ুয়াদের কথা ভেবে পুলকবাবুরাও স্কুলে যাচ্ছেন নিয়মিত৷
[সংসারে উচ্ছিষ্ট! বৃদ্ধা মাকে বাসস্ট্যান্ডে ফেলে যাওয়ার চেষ্টা ছেলের]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.