Advertisement
Advertisement
বাঁকুড়া

দু’বছরে কোনও অপরাধ নেই, বাঁকুড়ার ৭টি গ্রামকে পুরস্কৃত করল পুলিশ

রাজনৈতিক হানাহানিও নেই এই গ্রামগুলিতে।

No crime reported in two years, Bankura Police scripts new history

ছবিটি প্রতীকী

Published by: Bishakha Pal
  • Posted:November 21, 2019 12:48 pm
  • Updated:November 21, 2019 4:52 pm  

দেবব্রত দাস, খাতরা: এই গ্রামগুলিতে রাজনীতি আছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীদের পাশাপাশি বাস। কিন্তু রাজনীতির কচকচানি নেই। তাই রাজনৈতিক হানাহানিও নেই। গ্রামে স্বচ্ছল থেকে খেটে খাওয়া মানুষ, সবাই রয়েছেন। কিন্তু স্বচ্ছ্বলের ঘরে চোরের উপদ্রব নেই। এ আজকের ঘটনা নয়, গত দু’বছর এমন ঘটনাই ঘটছে এই গ্রামগুলিতে। এই দু’বছর কোনও পুলিশও ঢোকেনি এখানে। তাই ‘অপরাধ শূন্য গ্রাম’ হিসেবে পুরস্কৃত হল বাঁকুড়ার ৭টি গ্রাম।

গ্রামে নানা সম্প্রদায়ের বসবাস। ধর্মও ভিন্ন। তবু নেই ধর্মীয় ভেদাভেদ। গ্রামবাসীদের মধ্যে বিভেদ নেই। আপদে বিপদে একে অপরের পাশে দাঁড়ান তাঁরা। তাই রাজনীতির হানাহানি, ধর্মীয় বিদ্বেষ থেকে সহস্র যোজন দূরে থাকা এই গ্রামে তাই পুলিশ আসে না। বাঁকুড়ার ইন্দাস থানার এমনই শান্ত ৭টি গ্রামকে পুরস্কৃত করল পুলিশ। কিছুদিন আগে ইন্দাস হাইস্কুলে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এলাকার ৭টি গ্রামের প্রতিনিধিদের হাতে পুরস্কার তুলে দিলেন পুলিশ আধিকারিকরা। ইন্দাস থানার ওসি বিদ্যুৎ পাল বলেন, “গত দু’বছরের পুলিশ রেকর্ড দেখেই মেরাল, কাশপুকুর, মদনবাটি, সেখডাঙ্গা, প্রতাপমাঠ, সাঁওতারি ও ভাসনা- এই ৭টি গ্রামকে বিশেষভাবে পুরস্কৃত করা হয়েছে। ওই গ্রামের বাসিন্দারা অত্যন্ত শান্ত প্রকৃতির। নিজেদের সমস্যা নিজেরাই বসে মিটিয়ে নেন। তাই পুলিশের কাছে কেউ কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগও দায়ের করেননি। গ্রামের এমন শান্ত সুন্দর পরিবেশ দেখেই বাছাই করে ওই সাতটি গ্রামকে বিশেষভাবে পুরস্কৃত করা হয়েছে।”

Advertisement

bankura-prize

[ আরও পড়ুন: পনেরো হাজারে কুড়ি দিনের শিশুকন্যাকে ‘বিক্রি’, আটক মা-সহ ৫ ]

পুরস্কার বিতরণের দিন ইন্দাস হাইস্কুলে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। পুলিশের দেওয়া এই বিশেষ সম্মান প্রাপক মেরাল গ্রামের বাসিন্দা বামাচরণ যশ, নবেন্দু হাটি বলেন, “আমাদের গ্রামে বিগত কয়েক বছরে রাজনৈতিক গন্ডগোল হয়নি। গ্রামের মানুষ একেবারেই শান্ত। নানা সম্প্রদায়ের মানুষজন পাশাপাশি বসবাস করেন। কিন্তু কেউ কারও বিরুদ্ধে কোনদিন লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে যাননি। তাই গ্রামে গত তিন বছরে কোনওদিন পুলিশ আমাদের গ্রামে আসেনি। এমন সুন্দর গ্রাম্য পরিবেশ ধরে রাখতে পেরে আমরা গর্বিত। পুলিশের তরফে তাই আমাদের গ্রামকে বিশেষভাবে পুরস্কৃত করায় আমরা সকলেই খুশি।” মদনবাটি গ্রামের বাসিন্দা গণেশ পাঁজা বলেন, “গ্রামের মানুষ মিলেমিশে কাজ করি। কোনও গন্ডগোল হয়নি আমাদের গ্রামে। পুলিশের কাছে তাই আমাদের কারও যাওয়ার প্রয়োজনই পড়েনি। তারই পুরস্কার পেলাম পুলিশের কাছ থেকে। এটা আমাদের কাছে গর্বের।”

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরে ইন্দাস থানা এলাকায় ২৪১টি এফআইআর-সহ ডায়েরি হয়েছে মোট ৪৭৬টি। সেখানে ইন্দাস ২ পঞ্চায়েতের মেরাল, আকুই ২ পঞ্চায়েতের কাশপুকুর, আমরুল পঞ্চায়েতের মদনবাটি, করিশুণ্ডা পঞ্চায়েতের সেখডাঙ্গা, ইন্দাস ১ পঞ্চায়েতের প্রতাপমাঠ গ্রামের বাসিন্দাদের তরফে গত দু’বছরে কোন অভিযোগ থানায় জমা পড়েনি। আর ২০১১ সালের পর থেকে ইন্দাস ১ পঞ্চায়েতের সাঁওতারি ও রোল পঞ্চায়েতের ভাসনা গ্রামের বাসিন্দাদের কোন অভিযোগ থানায় লিপিবদ্ধ নেই। রাজনৈতিক সন্ত্রাসে দীর্ণ ইন্দাসে যা এক বিরল নজির। সেই নজির গড়েই পুরস্কৃত ইন্দাসের মেরাল, কাশপুকুর, মদনবাটি, সেখডাঙ্গা, প্রতাপমাঠ, সাঁওতারি ও ভাসনা।

[ আরও পড়ুন: মশা মারতে কামান দাগা! ডেঙ্গু প্রতিরোধে ড্রোন দিয়ে চালানো হবে নজরদারি ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement