Advertisement
Advertisement

রাসায়নিক নয়, হাতে তৈরি পলাশের ভেষজ রঙেই দোলে রাঙা হবে পুরুলিয়া

পড়ুয়া থেকে মহিলাদের হাতে তৈরি আবির মিলবে ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে।

No chemical, Purulia school and college making herbal color for Holi

পুরুলিয়ার আড়শার নিউ ইন্ট্রিগ্রেটেড গভর্নমেন্ট স্কুলে চলছে আবির তৈরির কাজ। ছবি: অমিতলাল সিং দেও।

Published by: Paramita Paul
  • Posted:March 21, 2024 4:24 pm
  • Updated:March 21, 2024 5:05 pm  

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ‘খেলব হোলি রঙ দেব না, তাই কখনও হয়…।’ দোল- হোলিতে রাঙিয়ে দিতে এবার ভেষজ আবির তৈরি করে রেখেছে পুরুলিয়া।

পরিবেশবান্ধব সেই আবিরেই রাঙিয়ে দেবে অযোধ্যা পাহাড় থেকে গড় পঞ্চকোট। দোলাডাঙ্গা থেকে দুয়ারসিনি। পুরুলিয়ার সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে ব্লক প্রশাসন, কৃষিদপ্তর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ভেষজ আবির তৈরি করেছে। পলাশ, পালংশাক, বিট, কাঁচা হলুদ এবং সিন্দুরি বীজ দিয়ে এই আবির তৈরি হয়েছে। যার রঙ লাল, গোলাপি, সবুজ, গেরুয়া, হলুদ। যা দোল-হোলিতে আসা বিপুল সংখ্যক পর্যটক-সহ সামগ্রিকভাবে এই জঙ্গলমহলে রঙ খেলায় মাতাতে পুরুলিয়ার যেন একটাই স্লোগান, রাসায়নিক রঙ বর্জন করে ভেষজ আবিরে রাঙা হয়ে উঠুন। সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিভাগের প্রধান ড.সুব্রত রাহা বলেন, ” আমরা এই কাজটাকে আরও ছড়িয়ে দিতে চাই। আমাদের লক্ষ্যটা তখনই সফল হবে যখন পুরোপুরি ভাবে আমরা রাসায়নিক রঙ বর্জন করতে পারব। শুধু তো দোল-হোলিতে নয় রঙ্গোলি সহ আরও নানান কাজেই আবির প্রয়োজন হয়। পুরুলিয়ার তৈরি এই ভেষজ আবির ই-কমার্স প্লাটফর্ম-র মাধ্যমেও যাতে বাজারজাতকরণ করা যায় আমাদের সেই চেষ্টাও শুরু হয়েছে।”

Advertisement

 

পুরুলিয়ার আড়শার নিউ ইন্ট্রিগ্রেটেড গভর্নমেন্ট স্কুলে চলছে আবির তৈরির কাজ। ছবি: অমিতলাল সিং দেও।

 

[আরও পড়ুন: শান্তনু গাঁজাখোর, ভোট দেবেন না! কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে বেনজির আক্রমণ দলেরই বিধায়কের, ভাইরাল অডিও]

২০১৬ সাল থেকে জঙ্গলমহলের এই জেলায় ভেষজ আবির তৈরির কাজ চলছে। সেই সময়ই বলরামপুর ব্লক প্রশাসন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় পুরুলিয়া জুড়ে থাকা অজস্র পলাশ ফুল থেকে আবির তৈরি শুরু করে। বলরামপুর ব্লক প্রশাসনের কর্মী প্রশান্ত মান্ডি সরকারি তত্ত্বাবধানে এই কাজে এগিয়ে আসেন। বিলুপ্তপ্রায় বিরহড় জনজাতির মানুষজনকেও এই আবির তৈরি শেখানো হয়। তারপর ২০১৯ সাল থেকে পুরুলিয়ার সিধো- কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে এই কাজ ছড়িয়ে পড়ে। যার মধ্য দিয়ে আয়ের পথ দেখছেন জেলার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা ছাড়াও ঘরের বধূ থেকে তরুণীরাও। এই ভেষজ আবিরের বাজারজাতকরণের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ই।

 

পুরুলিয়ার আড়শার নিউ ইন্ট্রিগ্রেটেড গভর্নমেন্ট স্কুলে চলছে আবির তৈরির কাজ। ছবি: অমিতলাল সিং দেও।

 

বলরামপুর ব্লক ছাড়াও মানবাজার এক, ঝালদা এক, ঝালদা দুই, পুরুলিয়া এক, হুড়া ব্লক প্রশাসনও এই আবির তৈরি করে। চলতি বছর জঙ্গলমহল আড়শা ব্লকের পিঠাতি গ্রামের নিউ ইন্ট্রিগ্রেটেড গভর্নমেন্ট স্কুলের পড়ুয়ারা এই ভেষজ আবির তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিদ্যা বিভাগের প্রধান ড.সুব্রত রাহার পাঠ দানে ওই পড়ুয়ারা পরিবেশবান্ধব আবির তৈরি করতে শেখে। ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের টিচার ইন চার্জ রিনা মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ২০০ জন ছাত্রছাত্রী এই ভেষজ আবির তৈরির পাঠ নিয়েছে। হাতে-কলমে শিখে তা তৈরিও করছে। আমাদের লক্ষ্য এটাই পড়ুয়াদের মধ্য দিয়ে এই ভেষজ আবির তৈরির বিষয়টি যাতে এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। কারণ এই জেলায় অজস্র পলাশ গাছ। যার ফুল-পাপড়ি মাটিতে পড়ে নষ্ট হয়ে যায়। এই খারাপ লাগা থেকে মহকুমা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে এই কাজটা করতে পেরেছি।”

[আরও পড়ুন: আচমকা বুকে ব্যথা, হাসপাতালে ভর্তি সব্যসাচী চক্রবর্তী]

পুরুলিয়ার আড়শার নিউ ইন্ট্রিগ্রেটেড গভর্নমেন্ট স্কুলে চলছে আবির তৈরির কাজ। ছবি: অমিতলাল সিং দেও।

একইভাবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে সম্প্রতি অযোধ্যা হিলটপের হাতিনাদা গ্রামে কৃষি দপ্তর ২৫ জন আদিবাসী মহিলাকে এই আবির তৈরির পাঠ দেন। হাতিনাদা ও ছাতনি গ্রামের ওই মহিলা কৃষকরা ইতিমধ্যেই ৪০০ প্যাকেট এই ভেষজ আবির তৈরি করেছেন। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলা, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাতে তৈরি আবির অযোধ্যা পাহাড়, গড় পঞ্চকোটের হোটেল, লজ, কটেজ, রিসর্ট, পর্যটক আবাস কর্তৃপক্ষ কিনে নিয়েছে। কম-বেশি ৭০ টাকায় ১০০ গ্রাম এই আবির মিলবে।

 

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement