সুব্রত বিশ্বাস: তাপমাত্রার পারদ উর্ধ্বমুখী। হাঁসফাঁস গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত সকলের। আর এই অসহ্য গরমে শোচনীয় অবস্থা লিলুয়া রেল হাসপাতালের রোগীদের। মেল মেডিকেল ওয়ার্ডটি এখনও পর্যন্ত শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত নয়। অথচ সমগ্র হাসপাতালটি এখন এসিতে মোড়া। ফলে তীব্র গরমে আরও অসুস্থ পড়ছেন রোগীরা। পাশাপাশি তাঁদের আরও অভিযোগ, আইসিইউতে নাকি বিশ্রাম করেন স্টাফরা। রোগী না থাকায় সেটি এখন রেস্ট রুমে পরিণত হয়েছে।
জানা গিয়েছে, ২৪ বেডের ওই ওয়ার্ডের রোগীদের পরিস্থিতি এখন এতটাই খারাপ যে, গরমে অসুস্থতা আরও বেড়ে যাচ্ছে। রোগীরা জানিয়েছেন, গত বুধবার ১০ নম্বর বেডের রোগীর শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে যায়। তাঁকে শেষমেশ আইসিইউতে নিয়ে গিয়ে অক্সিজেন দিতে। এখানেই রোগীদের অভিযোগ, আইসিইউতে রোগীর বদলে স্টাফরা বিশ্রাম করেন। রোগী না থাকায় সেটি এখন রেস্ট রুমে পরিণত হয়েছে। নাইট ডিউটিতে নাকি কর্মীরা সেখানে বিশ্রাম নেন।
কিন্তু রেলের যুক্তি, হাসপাতাল বিল্ডিংটি পুরনো। এসির বণ্টন ব্যবস্থা এই পরিস্থিতিতে ঠিক হবে না। যা নিয়ে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র জানান, পুরনো বিল্ডিং হওয়ায় এসি সার্কুলেট করতে অসুবিধা হবে। তবে পরবর্তী সময়ে এসি করা হবে ওয়ার্ডটি। পূর্ব রেলের মেনস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমিত মিত্র বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগের, সংগঠনের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে জিএমের কাছে অভিযোগ করা হবে। যাতে অবিলম্বে সমস্যা মেটানোর ব্যবস্থা হয়। হাসপাতালটির অব্যবস্থা নিয়ে বরাবরই ক্ষোভ রয়েছে রেলকর্মীদের মধ্যে। যেমন, খাবারের মান উপযুক্ত নয়। অধিকাংশ সময় যা খেতে দেওয়া হয় তা রোগীর পক্ষে গ্রহণযোগ্য নয়, বলে তাদের অভিযোগ।
এমনকি রোগী স্থানান্তরিত করার সময়ে, ভালো অ্যাম্বুলেন্সের বুকিং দেখানো হয়, অথচ রোগী পাঠানো হয় খারাপ অ্যাম্বুলেন্সে। বিষয়গুলো যাদের দেখার কথা, তারাই হাসপাতালে আসেন না বলে অভিযোগ। হাসপাতালটি লিলুয়া ওয়ার্কশপের কর্মীদের ও তাঁদের পরিবারের চিকিৎসার জন্য হয়েছিল। অথচ পরিকাঠামোই উপযুক্ত নয় বলে কর্মীদের অভিযোগ।
এদিকে হাওড়া অর্থোপেডিক হাসপাতালটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। লিলুয়া হাসপাতালের বহিঃবিভাগটি কয়েক বছর আগেই তৈরি হয়েছে। পরিষেবার উন্নতির লক্ষে। অথচ সম্প্রতি হাসপাতালটি নিয়ে বারবার অভিযোগ ওঠায় চিন্তিত রেলের স্বাস্থ্য বিভাগ। স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে এক শ্রেণির কর্মীরা হাসপালটিতে রাজত্ব করে যাচ্ছে। ফলে উন্নতি ব্যাহত হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে ব্যবস্থার কথা জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.