অর্ণব দাস, বারাকপুর: পরিচিতর সঙ্গে স্ত্রীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের সন্দেহে দীর্ঘদিন ধরেই পারিবারিক অশান্তি চলছিল। সেই আক্রোশে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে খাওয়ারে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে স্বামীকে খুন করার অভিযোগ উঠল স্ত্রীর বিরুদ্ধে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দমদম পুরসভার ৫নম্বর ওয়ার্ডের গোলবাগান এলাকায়। মৃতের নাম সুরজ আলি (৪২)। অভিযুক্ত স্ত্রী সায়মা বিবি খুনের অভিযোগ স্বীকার করে বৃহস্পতিবার নিমতা থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছে বলেই পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুরজের পরিবারে স্ত্রী ছাড়াও এক ছেলে, বউমা ও মেয়ে রয়েছে। অভিযোগ, সায়মা পারিবারিক পরিচিত একজনের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ায় স্বামীর সঙ্গে প্রায়ই অশান্তি হত। এমন পরিস্থিতিতে সুরজের বউমা তাঁর বাপের বাড়িতে গিয়েছিলেন। স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে বোনকে নিয়ে গত মঙ্গলবার শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিল সুরাজের একমাত্র ছেলে। অভিযোগ, সেই রাতেই বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে খাওয়ারে বিষ মিশিয়ে স্বামীকে খাইয়ে খুন করে সায়মা। এরপর রাতেই সে বাড়ির বাইরে তালা দিয়ে এলাকা ছাড়ে। বুধবার গোটা দিন বাড়িতে তালা ঝুললে প্রতিবেশীরা ভেবেছিল বাকি সদস্যরাও হয়ত আত্মীয়র বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে সায়মা নিজেই ভাসুরকে জানায় এই স্বামীকে খুন করে ঘরের মধ্যে ফেলে রেখেছে। সে নিজেই থানায় আত্মসমর্পণ করেছে।
এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই প্রতিবেশী ও পরিচিতরা এলাকায় বিক্ষোভ দেখলে উত্তেজনা ছড়ায়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দিয়ে তালা ভেঙে ঘরে ঢুকে বিছানা থেকে পচাগলা অবস্থায় সুরজের মৃতদেহ উদ্ধার করে। মৃতের ভাই সৌদুল আলি বলেন, “এদিন সকালে যখন কাছে বেড়িয়েছি, তখন মামাতো ভাই ফোন করে জানায়, স্ত্রী দাদাকে খুন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল। এদিন সকালে মামাতো ভাইয়ের কাছে দাদাকে খুন করার কথা স্ত্রী স্বীকার করেছে। তারপর সায়মা নিজেই নিমতা থানায় গিয়েছে। মৃতের নাবালিকা মেয়ে জানিয়েছে, মঙ্গলবার থেকে বাড়িতে ছিলাম না। এদিন সকাল ৮টার পরে খবর পাই মা বাবাকে খুন করে অন্যত্র চলে গিয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্ত শুরু হয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে আর কেউ জড়িত রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিষক্রিয়ার কারণেই মৃত্যু হয়েছে বলেই প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.